যুদ্ধাপরাধী নেত্রকোনার খলিলুর রহমানের মৃত্যুদণ্ড

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় নেত্রকোনার আল-বদর কমান্ডার খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। আজ বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা দেয়।

পলাতক খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সময় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল এ মামলায়। রায়ে সবগুলো অভিযোগেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং একটি অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

আদালতে প্রসিকিউটর ছিলেন সুলতান মাহমুদ সিমন, তাপস কান্তি বল ও রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন বলেন, চার আসামির মধ্যে বিচার চলাকালেই তিনজনের মৃত্যু হয়। একজন আসামি বেঁচে আছে। তিনিও পলাতক।

এর আগে গত ১৮ জুলাই উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মামলাটির রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে আদালত। ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি এ মামলার তদন্ত শেষ হয়।

শুরুর দিকে এ মামলায় আসামি ছিলেন ৫ জন। এরমধ্যে এক আসামি রমজান আলী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।বাকি চার আসামি হলেন নেত্রকোনার দুর্গাপূর থানার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের মৃত নবী হোসেনের ছেলে মো. খলিলুর রহমান, তার ভাই মো.আজিজুর রহমান, একই থানার আলমপুর ইউনিয়নের মৃত তোরাব আলীর ছেলে আশক আলী এবং জানিরগাঁও ইউনিয়নের মৃত কদর আলীর ছেলে মো. শাহনেওয়াজ। বিচার চলাকালে বাকি তিন আসামিও বিভিন্ন সময়ে মারা যান।

এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে দুর্গাপূর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন,অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধবংস করা, ধর্ষণের চেষ্টা,ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়।এরমধ্যে এক অভিযোগে ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত চারজনের মধ্যে দুইজনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪/১৫টি বাড়িতে লুটপাট এবং ৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে খলিলুর রহমান ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। পরে চন্ডিগড় ইউনিয়নে আল বদর বাহিনীর কমান্ডার হন। বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Exit mobile version