জার্মানি থেকে একটি ও জাপান থেকে তিনটিসহ মোট চারটি রোড রোলার কিনেছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন। ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেই রোলার দেশে আনার আগে দেখতে যাচ্ছেন দুই কর্মকর্তা। সাত দিনের সফরে আগামী বৃহস্পতিবার রোলার দেখতে জার্মানির পথে উড়াল দেবেন তারা।
অক্টোবরে অন্য তিন রোলার দেখতে জাপানেও যাওয়ার কথা রয়েছে তাদের। এদিকে রোলার দেখতে দুই কর্মকর্তার জার্মান সফরের খবরে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। সফর বাতিলের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।এ দুই কর্মকর্তা হলেন— সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. রফিকুল ইসলাম মিঞা ও সহকারী প্রকৌশলী জীবন কৃষ্ণ সরকার।
এ বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী জীবন কৃষ্ণ সরকার বলেন, বিদেশ যাচ্ছেন এ বিষয়ে তিনি জানেন। কিন্তু সে সংক্রান্ত কোনো কাগজ এখনও তিনি হাতে পাননি। বিষয়টি নিয়ে প্রধান প্রকৌশলী বলতে পারবে। তিনি বিদেশ ভ্রমণে নিয়ে এর বেশি কিছু বলতে চাননি।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক ও নাগরিক সেবা উন্নতকরণ প্রকল্পের কাজ চলছে। সেই প্রকল্পের আওতায় জাপানের একটি কোম্পানি থেকে তিনটি ও জার্মানির কোম্পানি থেকে একটি রোড রোলার কেনার চুক্তি করে সিটি করপোরেশন।
প্রায় ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে রোড রোলার প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত করেছে। কিন্তু রোলার গুলো সঠিক ভাবে কাজ করবে কি না, যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক আছে কি না, অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণ, কারখানা পরিদর্শন এবং চূড়ান্ত করার জন্য যাবেন দুই কর্মকর্তা।
‘জনউদ্যোগ’ ময়মনসিংহের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, এ সফর জনণের অর্থের অপচয়। ক্রয়পরবর্তী দেখতে যাওয়া অযৌক্তিক। চালানোর ক্ষেত্রে চালক যেতে পারে বা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির লোক দেশে এসে তা দেখিয়ে দিতে পারে।বিদেশ গিয়ে দেখতে হবে কেন এমন প্রশ্ন রেখে এ ধরনের সফর বাতিলের দাবি জানান অ্যাডভোকেট নজরুল।
সিটি করপোরেশনে প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. রফিকুল ইসলাম মিঞা বলেন, চারটি রোড রোলারেই টেন্ডার স্পেসিফিকেশনে বলা আছে প্রতিটি রোলারে দুইজন প্রকৌশলী অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণ, কারখানা পরিদর্শন এবং চূড়ান্ত করার জন্য বিদেশ যাবেন।
সরকার নীতিগত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ রাখার জন্য, পরবর্তীতে বলা হয়েছে টেন্ডার স্পেসিফিকেশনে যে সব যন্ত্রপাতি কেনা এবং যদি টেন্ডারে ধরা থাকে সে ক্ষেত্রে বিদেশে যেতে পারবে। সে বিবেচনায় সরকার আমাদের অনুমতি দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে আমরা কারখানা পরিদর্শন ও অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স ট্রেনিংয়ের জন্য যাচ্ছি। এতে কোয়ালিটিও এনশিউর হলো।
তিনি আরও বলেন, ভ্রমণে কতটাকা ধরা আছে এমন কিছু বলা নেই। মোট টাকার মধ্যে টেকনিকেল টেন্ডার স্পেসিফিকেশনে এই ভ্রমণ ধরা আছে। সে কারণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনুমতি দিয়েছে এবং সরকারি আদেশ হয়েছে। সরকারি আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জার্মান অ্যাম্বাসি ভিসা ও অনুমতি দিয়েছে। ব্যয় বহন করবে সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এতে সিটি করপোরেশন এবং সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে