আবহাওয়া ও জলবায়ুবাংলাদেশসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় দুই ফুটের অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা

সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলে তিন নম্বর সর্তকতা সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে উপকূলীয় নদীতে ২-৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।বুধবার সকাল থেকে জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।এতে ঝুঁকিতে রয়েছে উপকূলজুড়ে থাকা ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় রবিবার থেকে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। এর মধ্যে উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দুই ফুটের অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস। উপকূলীয় অঞ্চলে ৩ নম্বর সর্তকসংকেত জারি করা হয়েছে।নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, রাত থেকেই হালকা থেকে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদীতে জোয়ারের সময় বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে। গাবুরা, নাপিতখালি, জেলেখালি, তিন নম্বর পোল্ডারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। ইতোমধ্যে নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। জোয়ারের সময় বাঁধের কানায় কানায় পানি উঠছে।

আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম বলেন, ইউনিয়নের গদাইপুর এলাকার ৭/২ নম্বর পোল্ডারে সোমবার বেলা ১১টার দিকে খোলপেটুয়া নদীর ছয়-সাত হাত জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্রায় ২০০ বিঘা মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। পরে দুপুরের মধ্যে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে তা সংস্কার করা হয়। তবে পরবর্তী জোয়ারে কী হবে তা বলা যাচ্ছে না।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, একের আওতায় ৩৮০ কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৪২ কিলোমিটার। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ এলাকায় মেরামত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, দুইয়ের আওতায় সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলে ৪০০ কিলোমটিার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বঙ্গপোসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন আরও জানান, ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে।আগামী দুই-এক দিন আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকবে। তার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে

Back to top button