যুগ বদলের বইছে হাওয়া-শিক্ষা আমার প্রথম চাওয়া, শ্লোগানটি সামনে রেখে সারা দেশের আনাছে-কানাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে গেলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে,ফেনী শহরতলীর লালপোল বেধে পল্লীর শিশু-কিশোররা শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত রয়েছে।
দেশের ক্রমবর্ধমান শিক্ষার ধারার সাথে এ পল্লীর শিশু কিশোরদের ফেরাতে কেউ উদ্যোগী না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পল্লীর সরদার ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার আলো না পাওয়ায় ওই বেধে পল্লীতে বড় হওয়া অনেকেই অক্ষরজ্ঞান অর্জন করতে পারেনি। যারা এখন বড় হচ্ছে তাদেরও একই অবস্থার কথা জানালেন বাসিন্দারা।
এ পল্লীতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শিক্ষার সুবাতাস ছড়ানোর জন্য সরকারী-বেসরকারী সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।জানা যায়, ২০০০ সালের দিকে ফেনীর পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন থেকে ভিটেবাড়ি বিক্রি করে সড়ক-মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী বসবাস শুরু করে কতিপয় পরিবার।
তাদের সাথে আরো কিছু পরিবার যোগ হওয়ায় একপর্যায়ে এটি বেদে পল্লী হিসেবে খ্যাতি পায়। কয়েক স্থানে বসতি পরিবর্তনের পর সর্বশেষ প্রায় একযুগ আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপোল এলাকায় সরকারী খাস ভূমির উপর বসতি গড়ে তোলে এ পল্লীর বাসিন্দারা। সেই থেকে নাগরিক সুবিধা বঞ্চি ত হয়ে অবজ্ঞা-অবহেলায় বড় হচ্ছে বেদে পল্লীর শিশুরা।শিক্ষা-দিক্ষা ও নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এ মানুষগুলোর নেই স্থায়ী কোন পেশা। পড়াশোনা না জানা এ সম্প্রদায়ের লোকজন বেশিরভাগই বিভিন্ন রকমের ফেরী করেই দিনাতিপাত করেন।
কখনও সাপের খেলা-কখনও তাবিজ বিক্রি, ঝাড় ফুক দেয়া অথবা মাথায় ঝুড়ি নিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রির টাকায় চলে এদের পরিবার। দীর্ঘ দুইযুগেরও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরও এখানে এখনো গড়ে ওঠেনি নিরাপদ স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। এখানে নেই সুপেয় পানি ও খাবারের ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়; এখানকার শিশুদের জন্য নেই পড়ালেখার শেখার কোন স্কুল। শিক্ষার আলো বঞ্চিত রয়েছেন বর্তমানে এ পল্লীতে বসবাসরত ৭০টি পরিবার।
এসব পরিবারের ৬শতাধিক মানুষের মাঝে ২৩০ জনকে সরকারীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। তারা স্থানীয় কালীদহ ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন নির্বাচনের সময় দাবীকৃত নাগরিক সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এপল্লীর অবহেলিত মানুষদের পরে আর খোঁজ রাখেন না।
বাংলা ম্যাগাজিন /এনএইচ