আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১১টায় তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দার মহেন্দ্র নারায়ণ একাডেমি মাঠে জানাজা সম্পন্ন হয়।
এর আগে সেনাবাহিনীর লাশবাহী একটি ভ্যানে তার মরদেহ নগরকান্দায় আনা হয়। আজ সকাল থেকেই নগরকান্দা এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। তবে সকাল আটটার পর থেকে বৃষ্টি কমে আসে। জানাজার সময়ও টিপটিপ করে বৃষ্টি ঝরছিল। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই হাজারো মানুষ জানাজায় অংশ নেন। জানাজার পর বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাজেদা চৌধুরীর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
জানাজায় ইমামতি করেন নগরকান্দা মদিনাতুল উলুম মাদরাসার শিক্ষক ইসমাতুল্লাহ কাসেমী। নামাজে অংশ নেন কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা আজম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহানসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
এদিকে জানাজার আগে সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে শাহাদাব আকবর চৌধুরী জানান, তিনি তাঁর মায়ের পথ অনুসরণ করে নগরকান্দাবাসীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজনীতি করবেন এবং তাঁর বাকি জীবন এখানেই কাটিয়ে দেবেন।
এ ছাড়া জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মির্জা আজম। তিনি বলেন, রাজনীতির ক্ষেত্রে তিনি এত দিন যা শিখেছেন ও পেয়েছেন, সবকিছুই সাজেদা চৌধুরীর কাছ থেকে। সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে তিনি একজন অভিভাবক হারালেন।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে সাজেদা চৌধুরীর মরদেহ বহনকারী গাড়িটি সরকারি মানবেন্দ্র নারায়ণ একাডেমি মাঠে পৌঁছায়। এদিকে প্রস্তুতি থাকলেও বৃষ্টির কারণে সাজেদা চৌধুরীকে সেখানে গার্ড অব অনার দেওয়া সম্ভব হয়নি। জানাজা শেষে গাড়িটি আবার ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। ঢাকায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সাজেদা চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. শফিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, তাঁকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এদিকে, রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি ইন্তেকাল করেছেন।উচ্চরক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে আগস্টের শেষের দিকে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি হন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।
ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তিনি এক সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হন।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক শোক বার্তায় তারা মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এমপি।
বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ