মাথা উঁচু করে ফুটেছে শরতের বার্তা নিয়ে আসা সাদা কাশফুল

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহর থেকে এক কিলোমিটার দূরে লাউয়াছড়া সড়ক।চারদিকে সবুজ চা–বাগান। মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে একটি পাহাড়ি ছড়া। চা বাগানের ভেতর ফুটেছে সাদা কাশফুল। চোখ জুড়ানো এই অপরূপ সৌন্দর্য মন কাড়ছে পর্যটকদের।

উঁচু-নিচু টিলার মধ্যে চা বাগান। যেন সবুজে ছেয়ে গেছে চারদিক। চা বাগানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া ।চা–বাগানের সবুজের মধ্যে ছড়ার পাড় ঘেঁষে মাথা উঁচু করে ফুটেছে শরতের বার্তা নিয়ে আসা কাশফুল। এর দু’পাশে বালুচরের বির্স্তীণ এলাকা জুড়ে জেগেছে কাশবন।কাশফুলের শুভ্র চাদরে ছেয়ে গেছে চারিপাশ। অপরূপ সাদা কাশফুলের বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য মনোরম।

স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর আগস্টের শুরু কিংবা শেষের দিকে কাশফুলগুলো ফুটতে শুরু করে। সেপ্টেম্বর মাসে এসে সাদা কাশফুলে ছেয়ে যায় পুরো দুই কিলোমিটার এলাকা। সেপ্টেম্বরের শেষে কিংবা অক্টোবরের প্রথম দিকে ফুলগুলো ঝরে যায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ কাশবনে মানুষের ভিড় লেগে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামরুজ্জামান রানার কথায়, ‘সাদা ও সবুজের মিলনমেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি ছড়ার কূলে ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি অন্যরকম। কাশফুলের সাদা রঙে মনটা প্রফুল্ল হয়ে গেছে।’

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সায়মন করিম বলেন, পরিবার নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গলে এসেছেন। এখানকার নানা জায়গা ঘুরে দেখার পর স্থানীয় ব্যক্তিদের মুখে কাশবনের কথা শুনে তিনি এসেছেন। চারদিকে সবুজের মধ্যে সাদা কাশবনে পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়াতে বেশ ভালো লেগেছে। ঢাকার কাশবন আর এখানকার কাশবনের সৌন্দর্য ভিন্ন।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মূল ফটকে তালা। তবুও মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাসে অনেক পর্যটক আসেন। উদ্যানে ঢুকতে না পেরে চা বাগানের ভেতরে কাশবনে ঘোরাঘুরি করে ছবি তোলেন তারা।এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনায় মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন স্পটে এখন প্রবেশ নিষেধ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- লাউয়াছড়া উদ্যান ছাড়াও মাধবপুর লেক, মাধবকুণ্ড, হাকালুকি ও বাইক্কাবিল হাইল হাওর ইত্যাদি পর্যটন গন্তব্যে প্রবেশ নিষেধ রয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, নিরাপত্তাকর্মীরা কারও কারও কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে ঢুকতে দেন। বিশেষ করে লাউয়াছড়া উদ্যানের ভেতর টাকার বিনিময়ে কৌশলে যেতে দেওয়া হচ্ছে।

মৌলভীবাজারে দুটি পাঁচতারকা মানের হোটেল ও রিসোর্ট আছে। এর মধ্যে গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ বন্ধ রয়েছে। তবে দুসাই রিসোর্ট সীমিত আকারে খোলা হযেছে। বাকি সব হোটেল ও রিসোর্ট অতিথিদের সেবা দিচ্ছে।

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক এস কে দাশ সুমন  বলেন, চায়ের রাজধানী হিসেবে শ্রীমঙ্গলের খ্যাতি দেশে–বিদেশে। এখানে চা–বাগানের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা অনেক জায়গা আছে। তিন-চার বছর ধরে কাশফুলের বালুচরটি সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। শ্রীমঙ্গলে আসা পর্যটকেরা এখানে আসেন প্রকৃতি দেখতেই। তাঁদের কাছে কাশবন ও কাশফুলের সৌন্দর্য বাড়তি মাত্রা যোগ করে।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Exit mobile version