এক ব্যবসায়ী ও এক প্রবাসীকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে মারধর ও টাকা ছিনতাই

গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ উপজেলার রূপগঞ্জের গন্ধর্বপুর হাজিবাড়ী এলাকায় এক ব্যবসায়ী ও এক প্রবাসীকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নিয়ে মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী দুজন হলেন তারাব পৌরসভার রূপসী এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে প্রবাসী রমজান ভূঁইয়া (৪৭), ও একই এলাকার মৃত আবদুল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে ব্যবসায়ী মনির হোসেন (৫৩)। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে মনির হোসেন জানিয়েছেন।

রমজান ভূঁইয়া জানান, কিছুদিন আগেই কুয়েত থেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন। বুধবার তাঁকে গাড়িতে তুলেই মাথায় লোহার কোনো ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়। মাথা থেকে রক্ত ঝরছে বোঝার পর তিনি ওই ব্যক্তিদের কাছে জীবন ভিক্ষা চান। তখন তাঁরা আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে রমজানের হাঁটুতে আঘাত করতে থাকেন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে তিনি বাড়িতে আছেন বলে জানান।

রমজান আরও জানান, প্রত্যেকের গায়ে সাদা শার্ট ও প্যান্টের সঙ্গে ডিবির পোশাক জড়ানো ছিল। হাতে ওয়াকিটকি ছিল। তাঁদের একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভাষায় কথা বলেছিলেন।

মনির হোসেন জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি ও তাঁর শ্যালক রমজান ভূঁইয়া একসঙ্গে ইজিবাইকে করে জমি রেজিস্ট্রির জন্য রূপগঞ্জ ভূমি অফিসে যাচ্ছিলেন। তাঁরা গন্ধর্বপুর হাজিবাড়ী এলাকায় পৌঁছালে একটি সাদা মাইক্রোবাস সামনে থেকে তাঁদের ইজিবাইকের গতি রোধ করে।

পরে গাড়ি থেকে নেমে আসা পাঁচজন ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁদের গাড়িতে তুলে নেন। তাঁদের দুজনকে হাতকড়া দিয়ে বেঁধে সঙ্গে থাকা নগদ দেড় লাখ টাকা, মুঠোফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্র কেড়ে নেন। পরে কালো মুখোশ দিয়ে তাঁদের মুখ ঢেকে লোহার কোনো একটি বস্তু দিয়ে হাত, পা, মাথা ও হাঁটুতে মারধর করেন।

মনির আরও জানান, ‘গাড়িতে তুলেই আমাদের মাইক্রোবাসের মেঝেতে ফেলে তাঁরা মারধর করতে থাকেন। আমরা তখন টাকা নিয়ে আমাদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করি। তখন তাঁদের একজন জানান টাকার জন্য নয়, ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদের তোলা হয়েছে।

এর কিছুক্ষণ পর তাঁরা মুঠোফোনে কোনো একজনের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় একজন মুঠোফোনে বলেন, “স্যার, মিসটেক, ভুল ইনফরমেশন। স্যার, কী করব, ছেড়ে দেব?” এই আলাপের পর বেলা একটায় ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের ভুলতা আদুরিয়া এলাকায় তাঁরা আমাদের নামিয়ে দেন। গাড়ি থেকে নামানোর সময় পেছনে তাকাতে নিষেধ করেন। পেছনে তাকালে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। পরে গাড়িটি নরসিংদীর দিকে চলে যায়।’

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদের মুঠোফোনে কল করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-গ) আবির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Exit mobile version