আওয়ামী লীগঠাকুরগাঁওপ্রতারণাবিএনপিরাজনীতি

বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বাঁশের খুঁটিতে টাঙানো হয় কৃষি বিভাগের সাইনবোর্ড

ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়াতে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সামনে হঠাৎ করেই দলীয় সাইনবোর্ডের পরিবর্তে দেখা যাচ্ছে কৃষি অফিসের সাইনবোর্ড। গত শনিবার বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুরের পর আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনার তিন দিনের মাথায় সেখানে কৃষি বিভাগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই রুহিয়া থানা বিএনপির কার্যালয়ে এ সাইনবোর্ডটি দেখতে পান স্থানিয়রা। এরপর থেকেই তুমুল আলোচনা সমালোচনা শুরু হয় জেলাজুড়ে। দলীয় কার্যালয়ে এমন সাইনবোর্ড দেখে ক্ষুদ্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা। ফলে স্থানীয়রা রয়েছে হামলা ও সংঘর্ষের শঙ্কায়।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, তাদের দপ্তর থেকে সেখানে সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়নি।কিন্তু ঐ সাইনবোর্ডে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগোজুড়ে দিয়ে সেখানে লেখা হয়েছে, ‘উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রুহিয়া, ঠাকুরগাঁও।’

এর আগে, গত ৩ তারিখ বিকেলে একই দিনে রুহিয়া থানা বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি ও থানা মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুর জানান, ঠাকুরগাঁও রুহিয়া থানা বিএনপির কার্যালয়ের জায়গাটি তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি। ১৯৯৬ সালে তাঁর বাবা আবদুল জব্বার চৌধুরী ৫৩ শতক জমি বিএনপিকে কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য দেন। সেই থেকে বিএনপি ওই জায়গা ব্যবহার করে আসছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি মো. তৈমুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, জমির মালিকের সম্মতিতে ২৫ থেকে ২৬ বছর ধরে এই জায়গা বিএনপি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছে। এটা কোনো সরকারি জমি নয়। সরকারি দপ্তরের নাম দিয়ে একটি গোষ্ঠী এই জমি দখলে নিতে চাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সারা দেশে বিএনপির ওপর সরকার যে নির্যাতন-হয়রানি চালাচ্ছে, এটি তারই অংশ। তা না হলে কার্যালয়ে সরকারদলীয় লোকজনের হামলা ও ভাঙচুরের পর এ ঘটনা ঘটবে কেন?

গত ৩ তারিখে রুহিয়ার দলীয় কার্যালয় ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। এরই মধ্যে আজ সকালে দেখি সেই কার্যালয়ে সামনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রুহিয়া শাখার একটি সাইনবোর্ড। আমি অবাক হয়ে যাই। কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারের সাথে কথা বলেছি তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। যারা এমন কার্যকলাপ করে দলের ভামূর্তি নষ্ট করেছে তাদের যেন আইনের আওতায় আনা হয়।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘রুহিয়ায় কৃষি বিভাগের একটি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কোয়ার্টার রয়েছে। যেটি এখন পরিত্যক্ত। সেই জায়গাটি আমাদের দখলে আছে। তবে বিএনপির কার্যালয়সহ ওই জায়গার কাগজপত্র আমাদের অফিসে সংরক্ষিত নেই। সেখানে কে বা কারা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে, তা বলতে পারছি না। সেই সাইনবোর্ড কৃষি বিভাগ থেকে যে ঝোলানো হয়নি, তা নিশ্চিত করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই সাইনবোর্ডের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। এ ধরনের সাইনবোর্ড দেওয়া আমাদের কোন সুযোগ নেই। বিভাগীয় পর্যায়ে আলোচনা করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি ভেবে দেখব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুহিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কার্যালয়ে কৃষি বিভাগের সাইনবোর্ড ঝোলায়নি। এমনটি করে অন্য কেউ ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখবো।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Back to top button