ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় গ্যাসের চুলার ছিদ্র থেকে গ্যাস লিক করে বিস্ফোরণ হয়ে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে একই পরিবারের দুই শিশুসহ ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার জিনজিরা ইউনিয়নের মান্দাইল জেলেপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তাঁদের সবাইকে আজ সকাল সাতটার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধরা হলেন মোছা. বেগম (৬০), পান্না বেগম (৫০), সোনিয়া বেগম (২৬), শাহাজাদা (২০), মো. ইয়াছিন (১২) ও মরিয়ম আক্তার (৮)।
হাসপাতালে নিয়ে আসা দগ্ধদের স্বজন আসমানী বেগম জানান, ভোররাতে সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। ইয়াছিন বাথরুমে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। তার শরীরে হঠাৎ রান্নাঘরের গ্যাসের চুলার ছিদ্র থেকে আগুন লেগে যায়।
পরে সারা ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে গ্যাসের চুলায় আগুন ধরাতে গিয়ে এতে শাহাজাদা দগ্ধ হয়েছিলেন। পরে বাড়িওয়ালা এসে নতুন চুলা ঠিক করে দেয়। তাঁদের ধারণা, গ্যাসের চুলার লিকেজ থেকে যেকোনোভাবে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এ দুর্ঘটনা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক এস এম এস এম আইউব হোসেন আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জানান আগুনে মোছা. বেগমের শরীরের ২৩ শতাংশ, শাহজাদার ৫২, ইয়াছিন আরাফাতের ২৮, সোনিয়া বেগমের ২৩, তাঁর মেয়ে শিশু মরিয়মের ৬০ ও পান্না বেগমের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁদের মধ্যে সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক। বর্তমানে তাঁরা চিকিৎসাধীন।
জেলেপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহীন হোসেন জানান, চারতলা বাড়িটির নিচতলা থেকে ভোর সাড়ে চারটার দিকে বিস্ফোরণের শব্দ পান তাঁরা। এরপর সেখানে গিয়ে দেখতে পান ঘরের সদস্যরা দগ্ধ হয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর তাঁদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ বলেন, মোমবাতি দিয়ে গ্যাসের চুল জ্বালাতে গিয়ে একই পরিবারের ছয় সদস্য অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ওই বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তাঁরা। সেখানে গিয়ে ধোঁয়া দেখতে পান। তিনি বলেন, কীভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।
বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ