মির্জা ফখরুলকে নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে বিএনপিতে

জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে বিএনপিতে সন্দেহ-অবিশ্বাস যেন তত বাড়ছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক নেতার বিশেষ সম্পর্ক আছে এমন ধারণাই বিএনপির অনেক নেতার। যে কারণে বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বিভিন্ন সময় বলেছেন, সরকার পতনের লড়াইয়ের ময়দানে অনেকেই দালালি করবে। অনেকেই ষড়যন্ত্রের শিকার হবে। তবে এবার সেই সন্দেহের তীর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘিরেই।

গত ১২ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন যে, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার বিদেশি চাপে আছে। তাই বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে কোনো ঝামেলা করছে না।নাম উল্লেখ না করে মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিএনপির অনেক নেতাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা বিশ্বাস করেন।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন যদি বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে কোনো ঝামেলা না করছে তাহলে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রতিবাদে আমাদের লোক কেন জীবন দিলো। তারপরও আমাদের কোনো কোনো নেতা বলেন, সরকার বিদেশিদের চাপে আমাদের কর্মসূচিতে ঝামেলা করছে না। দুটা প্রাণ কেড়ে নিলো তারপরও বলছে ঝামেলা করছে না।বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, যেখানে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয় সেখানে ইভিএম নিয়ে কথা হবে না। বিএনপির কেউ কেউ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপি গতবারের মতোই ভোটে অংশ নিতে পারে এমন শঙ্কার কথাও প্রকাশ করেন তিনি।বিশ্লেষকরা বলেছেন, মির্জা ফখরুলকে সন্দেহ করার একাধিক দৃষ্টান্ত আছে বিএনপিতে। কারণ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ফখরুলের নেতৃত্বে ঐক্য ফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল বিএনপি। বিএনপির অধিকাংশ নেতারাই মনে করেন যে, সেই ঐক্যফ্রন্ট ছিল বিএনপিকে নির্বাচনে আনার সরকারি একটি কৌশল। এছাড়া ভুল রাজনীতির কারণে বিএনপি এখন ‘চোরাগলিতে’ আটকে গেছে বলেও অভিমত বিশ্লেষকদের। দলের ভেতর বিভিন্ন ধরনের সংকটে টালমাটাল দলটি। সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্টা করলেও সুবিধা করতে পারছে না দলটি। বরং আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। এদিকে অসুস্থ হলেও এখনও বিএনপির কাণ্ডারি খালেদা জিয়া।

কিন্তু নানা কারণে দলের নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হচ্ছে না। আবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া লন্ডনে বসে স্বেচ্ছাচারীভাবে দল পরিচালনা করছেন বলেও দলের অভ্যন্তণে চর্চা রয়েছে। যাকে মন চাইছেন বহিষ্কার করছেন আবার যাকে মন চাইছেন শোকজ করছেন। ফলে নিজ দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সরকারের সঙ্গে আঁতাত বা তৃতীয় শক্তির উত্থান তৎপরতায় নেতারা জড়িত হলে সেটা অস্বাভাবিক নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলা ম্যাগাজিন /এনএইচ

Exit mobile version