ভারতের ‘সুপারটেক টুইন টাওয়ার’ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৯ সেকেন্ড
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের নয়ডা শহরে বিধিবহির্ভূতভাবে নির্মিত ‘সুপারটেক টুইন টাওয়ার’ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ রোববার ব্যাপক বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বিস্ফোরণটি স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৯ সেকেন্ড।
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের জন্য ৩ হাজার ৭০০ কেজির বেশি ওজনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। দুটি ভবনে প্রায় সাত হাজার ছিদ্রের ভেতর বিস্ফোরক ঢোকানো হয়েছিল। ২০ হাজার সার্কিট স্থাপন করা হয় সেখানে। ‘ওয়াটারফল টেকনিক’ ব্যবহার করে বিস্ফোরণ করার কারণে টাওয়ার দুটি সোজাসুজি নিচের দিকে ভেঙে পড়েছে।
ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগে ওই এলাকার প্রায় সাত হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। আশপাশের ভবনগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ওই পথে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
৯ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া আদেশের ভিত্তিতে টাওয়ার দুটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো। ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শেষ হওয়ার পর এখন নয়ডা কর্তৃপক্ষের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হলো ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করা।
ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলে দিয়েছেন প্রায় ৫৫ হাজার টন ওজনের ধ্বংসাবশেষ জমা হতে পারে। আর তা পরিষ্কারের জন্য তিন মাস সময় লাগতে পারে। নির্ধারিত এলাকায় এসব আবর্জনা ফেলা হবে।
আশপাশের কিছু ভবনের অবস্থান টুইন টাওয়ার থেকে মাত্র আট মিটার দূরত্বে। অন্যগুলোর দূরত্ব ১২ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে। ধুলা থেকে বাঁচাতে এগুলোকে বিশেষ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ওই এলাকায় এক নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে।
‘সুপারটেক টুইন টাওয়ারের’ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রতিটি টাওয়ারে ৪০টি করে তলা নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল। তবে আদালতের আদেশের কারণে কিছু তলা নির্মাণ করা যায়নি। আবার বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগেই ভবন বিস্ফোরক ব্যবহার ছাড়াই হাতে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। আজ বিস্ফোরণের আগপর্যন্ত ২টি টাওয়ারের ১টিতে ৩২ তলা এবং আরেকটিতে ২৯টি তলা ছিল।
সুপারটেক এমার্যাল্ড কোর্ট সোসাইটি প্রাঙ্গণে বিধি লঙ্ঘন করে টাওয়ার দুটি নির্মিত হয়েছে অভিযোগ করে ২০১২ সালে আদালতের দ্বারস্থ হন স্থানীয় লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, টাওয়ারগুলো যেখানে তৈরি করা হয়েছে, সেখানে বাগান করার পরিকল্পনা ছিল।
২০১৪ সালে টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার আদেশ দেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এরপর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায়। গত বছরের আগস্টে ভবনটি গুঁড়িয়ে দিতে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেন সুপ্রিম কোর্ট। মুম্বাইভিত্তিক কোম্পানি এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিংকে দুটি টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কারিগরি জটিলতার কারণে এ প্রক্রিয়া শুরু করতে এক বছর লেগেছে।
বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ