যশোরে গভীর রাতে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে সিরিজ হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী নৈশপ্রহরী ও সিসিটিভির ফুটেজ দেখে জানা যায়, রাত পৌঁনে ২টার দিকে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল যোগে ৩০-৪০ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মরহুম তরিকুল ইসলামের ঘোপের বাসায় আক্রমণ করে।
এর পরপরই ওই হামলাকারী গ্রুপটি যশোর উপশহরে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান খানের বাড়িতে চড়াও হয়। হামলাকারীরা বাড়ির সামনের সিকিউরিটি লাইট ও একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। এছাড়া হামলাকারীদের ছোড়া ইটপাটকেলে বাড়ির উপরের তলার বেশ কিছু জানালার গ্লাস ভেঙ্গে যায়। এরপর হামলাকারী ওই গ্রুপটি একই এলাকায় অবস্থিত জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
তারা তরিকুল ইসলামের বাড়ির প্রধান ফটক ভাঙ্গার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় তারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে রাতের নীরবতা ভেঙ্গে মুহুর মুহুর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া ইটের আঘাতে বাড়ির সিকিউরিটি লাইট ও দোতলার জানালার বেশ কয়েকটি গ্লাস ভেঙ্গে ইট ভেতরে ঢুকে যায়। তারা গালিগালাজ করে এলাকা ত্যাগ করে।
এই হামলার পর গাড়িবহর নিয়ে শহরের কারবালায় অবস্থিত জেলা বিএনপির অপর যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তাদের দেয়া জয় বাংলা স্লোগানে রাতের স্তব্ধতা ভেঙ্গে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। তারা বাড়ির দোতলা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বাড়ির বেশ কয়েকটি জানালার গ্লাস ভেঙ্গে পড়ে। হামলাকারীরা এসময় নেতাদের নাম ধরে গালিগালাজ করতে থাকে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান খান বলেন, এই ধরনের বর্বর হামলার ঘটনা যশোরে এর আগেও ঘটেছে। কিন্তু এবারের হামলার প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মোটর শোভাযাত্রাসহকারে পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতা সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। শান্ত যশোরকে তারা অশান্ত করার পায়তারা করছে। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত শহরের পরিচিত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে আটক করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান তিনি।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, এই হামলা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নগ্নতার বহিঃপ্রকাশ। তারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে এই হামলা চালিয়ে গোটা এলাকা আতঙ্কিত করে তুলেছে। তাদের হামলায় বাড়ি ঘরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
সকালে এখবর ছড়িয়ে পড়লে হামলার শিকার নেতাদের বাড়িতে দলীয় কর্মীরা ভিড় জমাতে থাকেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত হামলা সম্পর্কে বলেন, এমন সন্ত্রাসী হামলা খুব কম চোখে পড়ে। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে সন্ত্রাসীদের জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। সন্ত্রাসীরা এসময় মুহুর মুহুর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
তারা বাড়ির নৈশ প্রহরীদের লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে গেট খুলতে বলে। নৈশ প্রহরীরা প্রাণের ভয়ে গেট ছেড়ে পালিয়ে যায়। এর পর সন্ত্রাসীরা বাড়ির প্রধান ফটকের বাইরে থেকে বাড়ি লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। সন্ত্রাসীদের হামলায় বাড়ির সিকিউরিটি লাইট ও বাড়ির বেশ কয়েকটি জানালার গ্লাস ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা জানান।
বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে