ধর্ষিতার হাত থেকে বাঁচতে কীর্তনখোলা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল পুলিশ কনস্টেবল কাওছার। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে মাঝ নদীতে ভেসে থাকা অবস্থায় তাকে আটক করে। পরে ওই তরুণী বাদী হয়ে মামলা করার পর সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আজিমুল করিম।ওসি জানান, গ্রেপ্তার কাওছার আহম্মেদ বরিশাল জেলা পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে পুলিশ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। তিনি বরগুনা জেলা সদরের আমড়াঝুড়ি এলাকার আলম শিকদারের ছেলে।
তবে চাকরির সুবাদে কাওছার বরিশাল নগরের দক্ষিণ আলেকান্দা এলাকার বুকভিলা গলির একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। ভুক্তভোগী তরুণী বর্তমানে ২০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।তিনি বলেন, মামলার বাদী ও ভিকটিম তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগীর বরাত দিয়ে ওসি বলেন, গত জানুয়ারি মাসে স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে ওই বাসায় ভাড়া ওঠে এই কনস্টেবল। সেখানে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার ধর্ষণ করে। তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মা ও খালাকে বিষয়টি জানান। তারা চিকিৎসকের কাছে নিলে ২০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানান।
ঘটনা জানতে পেরে কাওছার পালিয়ে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়ে ওই তরুণী কাওছারকে আটক করে। তখন কাওছার তার হাত থেকে রেহাই পেতে নদীতে ঝাঁপ দেয়। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, রাতেই ওই তরুণী বাদী হয়ে তাকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাওছারকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে কীর্তনখোলা নদীর পাড় সংলগ্ন ত্রিশ গোডাউন এলাকা থেকে কাওছারকে আটকের চেষ্টা করা হয়। সেখান থেকে তাকে নিয়ে রওনা হওয়ার পর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালায় সে। এ সময় একজনের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে কাওছার তার হাত থেকে ছুটে নদীতে ঝাঁপ দেয়।
ট্রলার নিয়ে মাঝ নদী থেকে তাকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, নগরীর ত্রিশ গোডাউন এলাকায় কীর্তনখোলা নদীতে ঝাঁপ দেয় কনস্টেবল কাওছার। তখন এক নারী ৯৯৯-এ কল দিলে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে তাকে আটক করে নিয়ে আসে। পরে ভুক্তভোগীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।
বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে