তিন হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ফেঁসে যাচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ নয়-ছয়ের ব্যাপারটি এখন তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই তদন্ত করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত অনেকগুলো চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে বলে দুদক সূত্রে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বিরুদ্ধে মামলা স্থগিত করার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
কিন্তু আপিল বিভাগ সেই মামলার ব্যাপারে কোনো রকম নির্দেশনা দেননি। এর অর্থ ওই মামলাটি চলবে। আর দুদক যে অনুসন্ধান করছে সেই অনুসন্ধান চূড়ান্ত ধাপে গেলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে ফেঁসে যাবেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলেই প্রাথমিক তথ্য প্রমাণে নিশ্চিত হওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে, ২০১০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশ ৪৩৭ কোটি এক লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা নির্ধারিত হিসেবে জমা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে সম্পূর্ণ টাকা গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রাপ্য হলেও এর মধ্যে ২৬ কোটি ২২ লাখ ছয় হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকম এমপ্লয়ি ইউনিয়নের হিসেবে জমা হয়। ওই অ্যাকাউন্টের সিগনেটরি ছিলেন গ্রামীণ টেলিকমের এমডি নাজমুল ইসলাম, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান। সেই হিসেবে অর্থ আত্মসাতের দায় এই তিনজনের ওপর পড়ে। তবে সবকিছু করা হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশেই, এমনটি প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, শ্রমিকদের ২৬ কোটি টাকার প্রথম দফায় আইনজীবী ইউনূস আলীর আইনি প্রতিষ্ঠানে এক কোটি টাকা, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও ইউনিয়নের অপর নেতা মাইনুল ইসলাম প্রত্যেকে তিন কোটি টাকা করে নেন। ইউনূস আলী নতুনভাবে আবার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং সেখানে ৯ কোটি টাকা জমা হয়।
এছাড়াও ইউনূস আলী এবং অপর আইনজীবী জাফরুল হাসান চৌধুরী যৌথভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং সেখানে ছয় কোটি টাকা জমা করা হয়। ভাগবাটোয়ারার মধ্যে ১৬ কোটি টাকাই পেয়েছেন ইউনূস আলী। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, যখন এই মামলাটি চলতে থাকে সেই সময়ে ইউনূস আলীর সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক হয় এবং এই বৈঠকের মধ্যে মাধ্যমেই টাকার ভাগবাটোয়ারার দফারফা করা হয়। শুধু তাই নয়, এই সময় গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং করেছে বলেও প্রাথমিক অভিযোগে প্রমাণিত হয়েছে।
এই লভ্যাংশের টাকাগুলো ড. ইউনূস তার একাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন। পরবর্তীতে তিনি সেই অর্থগুলো বিদেশে পাচার করেছেন বলেও সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে যে, লভ্যাংশের সব টাকা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একাউন্টে জমা হয়নি। কিছু টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন এবং সেই টাকার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। অনুসন্ধান করলেই বোঝা যাবে যে, এই টাকা তিনি কোথায় কিভাবে খরচ করেছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান এবং এই প্রতিষ্ঠানটি আয় ব্যয় নানারকম হিসেব-নিকেশ সবকিছুই তাঁর নির্দেশে হতো। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ইউনূসের একজন ঘনিষ্ঠ এবং আজ্ঞাবহ বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, গত ১৬ আগস্ট থেকে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং এই তদন্ত শেষে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাবে বলেই তদন্তকারী সংস্থার লোকজন মনে করছেন। ফলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফেঁসে যেতে পারেন এবং এই অপরাধে যদি তিনি দণ্ডিত হন তাহলে তাকে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এখন দেখা যাক তদন্ত শেষ হয় কবে।
বাংলা ম্যাগাজিন /এনএইচ