বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযানের পাঁচ বছর পূর্তিতে দেওয়া বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একথা বলেছেন। তবে কবে থেকে কত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার এক বিবৃতিতে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্মিলিত মানবিক সহায়তার অত্যাবশ্যক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা বাংলাদেশসহ ওই অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে কাজ করছি। যাতে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের জীবনকে নতুনভাবে গড়তে পারে।’
বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পাঁচ বছর আগে বার্মার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বর্বর অভিযান চালায়। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, ধর্ষণ, নির্যাতন এবং ব্যাপক মাত্রায় সহিংসতা চালিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করা হয়।
সাত লাখ ৪০ হাজারের ঘরবাড়ি ছেলে পালাতে বাধ্য হয় এবং বাংলাদেশে আশ্রয় চায়। গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে তিনি বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বার্মার সেনাবাহিনী যে নৃশংসতা চালিয়েছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল এবং যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছে। এটার স্বীকৃতিও সেদিন দিয়েছিলেন তিনি।
২০১৭ সালে আগস্টে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন–পীড়নের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এই রোহিঙ্গাদের স্বভূমিতে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হলেও এখনো তা কার্যকর হয়নি। আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করছে বাংলাদেশ।
কক্সবাজারের জনাকীর্ণ পরিবেশ থেকে সরিয়ে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে তাঁদের জন্য নানা অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। রোহিঙ্গারা নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় কক্সবাজারের পরিবেশ খারাপ হচ্ছে।
বিভিন্ন সময় পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় দ্রুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বন্দোবস্ত করার জন্য বলে আসছে বাংলাদেশ।
এমনকি পশ্চিম দেশগুলোর মধ্যে কোনো দেশ পারলে যেন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়, সে আহ্বানও জানানো হচ্ছে।এই প্রেক্ষাপটে সংকটের পাঁচ বছরের মাথায় প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কাজ করছে বলে জানালেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ
Wish decisions