হা হুতাশ করে ঘরে বসে না থেকে রাস্তায় নেমে জনগণকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।জোটের নেতারা বলেন, জনগণের নৈতিক সমর্থনের কারণেই আধা বেলা হরতাল সফল হয়েছে। নিত্যপণ্যসহ জ্বালানি তেলের দাম কমানো না হলে ভবিষ্যতে অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে হরতাল পরবর্তী সমাবেশে জোটের নেতারা এসব কথা বলেন।এর আগে হরতালের সমর্থনে সকাল ছয়টা থেকে পল্টন মোড়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা–কর্মীরা অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা মিছিল, স্লোগান ও বক্তব্যের মাধ্যমে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন।
জ্বালানি তেল, ইউরিয়া সার, খাদ্যসহ নিত্যপণ্য ও পরিবহনের ভাড়া কমানো এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে সারা দেশে বাম গণতান্ত্রিক জোট অর্ধদিবস হরতাল পালন করেছে।
বেলা ১১টার দিকে পল্টন মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, নিত্যপণ্যের দাম যখন বেড়েই চলছিল, তখন সারের দাম বাড়িয়ে সরকার আগুনে ঘি ঢালল। এরপর আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে আগুনে আরও ঘি ঢালা হলো। ভর্তুকি দেওয়ার অযুহাতে তারা জ্বালানির দাম বাড়াল। অথচ দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূর করলে ভর্তুকি দেওয়া লাগত না।
রুহিন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ডিমের দাম বাড়িয়ে ৭ দিনে ৫২০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালন লাইন না থাকার পরও ৮৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর কারণ একটাই যেকোনোভাবে হোক জনগণের পকেট থেকে টাকা নিতে হবে।
কারণ, এ সরকার ক্ষমতায় আছে সামরিক-বেসামরিক আমলা, আর লুটপাটকারী দেশি–বিদেশি গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করার জন্যে। তারা কোনোভাবেই তাদের গায়ে হাত দিতে চায় না।
সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পল্টন মোড়ে জোটের নেতা–কর্মীদের অবস্থানের সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে বেলা ১১টার দিকে হরতালকারীরা হঠাৎ যানবাহনের চালকদের ওপর চড়াও হন। অবশ্য সকাল থেকেই এ পথে বিভিন্ন গন্তব্যের বাস সীমিতভাবে চলাচল করছিল। হরতাল সমর্থনকারীরা যানবাহন থামাতে গেলে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের সদস্যরা পল্টন মোড়ের উত্তর দিকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যান চলাচলের সুযোগ করে দেন।বাম জোটের ডাকা আধা বেলা হরতাল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে প্রেসক্লাব ও পল্টন মোড়ে সকাল থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পল্টন মোড়ের দক্ষিণ পাশে সাঁজোয়া যানও রাখা ছিল।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রশীদ ফিরোজ, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, সিপিবির সহসাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, কমিউনিস্ট লীগের নেতা হারুন উর রশীদ প্রমুখ।
জনগণের নৈতিক সমর্থনের কারণেই হরতাল সফল হয়েছে উল্লেখ করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ভবিষ্যতে আর কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ