ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বিএনপির বিক্ষোভ-সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ আলম সভাপতিত্ব করেন।প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান। সমাবেশে বিএনপি–সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য জেড এম মর্তুজা, জেলা বিএনপির সহসভাপতি সুলতানুল ফেরদৌস, জেলা মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নেহার, সাধারণ সম্পাদক নাজমা পারভীন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক টি এম মাহবুবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ বেলা তিনটা থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থল উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সমাবেশ চলাকালে তৈমুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে ইট নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে সমাবেশে থাকা বিএনপির নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পরে আওয়ামী লীগের কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সমাবেশে হামলা করেন।
তাঁরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের মারধর ও চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করেন। এ সময় তৈমুর রহমানসহ বিএনপির নেতারা দলের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ বিএনপির জেলার নেতাদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁওয়ে পাঠিয়ে দেয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল। আমি কেবল বক্তব্য শুরু করেছি, এমন সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়েছে। আমরা যাতে সরকারের লুটপাট, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনের কারণগুলো জনগণকে জানাতে না পারি, সে কারণেই আওয়ামী লীগ এ হামলা চালিয়েছে। সরকার দলীয় লোকজন যে হামলা–মামলা দিয়ে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করার পরিকল্পনা করেছে, এ হামলা তারই প্রমাণ।’
এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক টি এম মাহবুবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের হামলায় তাঁদের অর্ধশত কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। হামলার সময় পুলিশ থাকলেও আওয়ামী লীগ কর্মীদের আটক করেনি। বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খায়রুল আনাম বলেন, বিএনপির এক নেত্রীর বক্তব্য নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নেয়। এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
তবে বিএনপির বিক্ষোভ–সমাবেশে হামলা চালানোর এ অভিযোগ অস্বীকার করেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বালিয়াডাঙ্গী সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের ঘাঁটি। বিএনপির নেতা-কর্মীরাও তাঁকে ভালোবাসেন।
তাঁর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় সমাবেশে উপস্থিত লোকজনই সেই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নন। নিজেদের দোষ ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই তাঁরা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ওপর মিথ্যা দোষারোপ করছেন।
বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে