অপরাধআওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভঢাকাবাংলাদেশরাজধানীরাজনীতিশিক্ষাঙ্গন

ইডেন ছাত্রলীগ সভাপতির অডিও ফাঁস করার জন্য ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি

সম্প্রতি রুমে থাকতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার টাকা দাবি নিয়ে দুই ছাত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অডিও ফাঁস হয়েছিল। এবার সেই ছাত্রীদের আটকে রেখে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

ইডেন কলেজের একটি সূত্র জানায়, আটকে রাখা অবস্থায় ওই দুই ছাত্রীর কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য হুমকি দিয়েছেন রিভা। আগের ঘটনা অডিও ভাইরাল করার স্বীকারোক্তি চান তিনি। তা না হলে বিবস্ত্র করে ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দেন।বিকেলে ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেত্রী এবং শিক্ষক ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীকে ঘটনা খুলে বলার জন্য নানাভাবে আশ্বস্ত করছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালের দিকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের পর অবশেষে ‘মিথ্যা স্বীকারোক্তি’ দিতে বাধ্য হন ওই দুই ছাত্রী। ইডেন কলেজের রাজিয়া বেগম ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে এ নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ নারগিস রুমা গিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন। ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীর নাম রুপা ও মিথিলা।

এর আগে গত শুক্রবার হলরুমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি অডিও রেকর্ডের সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা।অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তামান্না জেসমিন রিভাকে একাধিকবার ফোন কল করা হলেও রিসিভ করেননি।

ভিডিওতে একজন ভুক্তভোগীকে বলতে দেখা যায়, ছাত্রলীগ সভাপতি তাঁদের আটকে রেখে ‘এক পায়ে পাড়া দিমু, আরেক পায়ে টাইনা ছিঁড়ে ফেলব’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা এই মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে বলেন। ওই ঘটনার অডিও রেকর্ড করতে নির্দেশ দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমনা মীম—এমন স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন।

স্বীকারোক্তি না দিলে বিবস্ত্র করে ভিডিও করে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন রিভা। তখন দুই ছাত্রী রিভার লিখে দেওয়া স্বীকারোক্তি পড়তে বাধ্য হন। সেটি রিভা এবং অন্যরা রেকর্ড করেন। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, রাজনৈতিক নানা কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধ্য করেন রিভা। অসুস্থ থাকলেও ছাড় দেন না তিনি।

দীর্ঘদিন ধরেই এই নিপীড়ন চলছিল। কিন্তু সেদিন প্রমাণ রাখার জন্য তিনি অডিও রেকর্ড করেন। ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমনা মীম তাঁকে কখনো এ ব্যাপারে নির্দেশনা বা পরামর্শ দেননি।এ সময় ভুক্তভোগী অপর ছাত্রীকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে ঘটনার বর্ণনা দিতে বললে তিনি ভয়ে সিঁটিয়ে থাকেন।

পড়াশোনার জন্য ক্যাম্পাসে আরও কয়েক বছর থাকতে হবে, এই কারণে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় তিনি কিছুই বলতে চাচ্ছিলেন না। কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, এই ভিডিও বাইরে ছড়িয়ে পড়লে তাঁর নিরাপত্তা দেবে কে?

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজিয়া বেগম ছাত্রীনিবাসের প্রাধ্যক্ষ নারগিস রুমা বলেন, ‘এ রকম কোনো বিষয় আমার জানা নেই।’ ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে একাধিকবার কলা করা হলে তিনিও রিসিভ করেননি এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের কোনো প্রত্যুত্তর দেননি।

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে

Back to top button