অপরাধআমেরিকাএক্সক্লুসিভবিশ্ব সংবাদশিক্ষাঙ্গন

স্কুলে হামলার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাস্ট্র শিক্ষকদের অস্ত্র দিচ্ছে

গত মে মাসে টেক্সাসের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮ বছর বয়সী এক বন্দুকধারীর গুলিতে ১৯ শিশুসহ ২১ জনকে হত্যার পর থেকে আমেরিকার পাঁচ কোটিরও বেশি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী ও কর্মীদের সুরক্ষার দাবি জোরালো হতে শুরু করে।

ওই বর্বরোচিত ঘটনার কয়েক মাস পরও হামলার সেই স্মৃতি এখনো কিছু শিক্ষার্থীকে তাড়া করে বেড়ায়। এ ঘটনার পর সাময়িক সমাধান হিসেবে কিছু স্কুল বন্দুকধারীর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবে শিক্ষকদের অস্ত্র দিচ্ছে। শিক্ষকদের আগ্নেয়াস্ত্র বহনে জীবন বাঁচাবে কি না, বা এতে ভালোর চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ভয়েজ অব আমেরিকা এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গতকাল সোমবার।

গত মে মাসে, টেক্সাসের উভালদেতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮ বছর বয়সী এক বন্দুকধারীর গুলিতে ১৯ শিশু ২১ জনকে হত্যা করা হয়। এর পর থেকে, যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ কোটিরও বেশি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী ও কর্মীদের সুরক্ষার দাবি জোরালো হয়।

ওই হামলার কয়েক মাস পরও, হামলার সেই স্মৃতি এখনো কিছু শিক্ষার্থীকে তাড়া করছে। ভার্জিনিয়ার মনসাসের এক হাইস্কুলশিক্ষার্থী টনি উইলিয়ামস বলে, ‘আমি স্কুলে যেতে চাই, এটা নিশ্চিত হয়ে যে সেখানে আমি এবং আমার সহপাঠীরা নিরাপদ।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু করার জন্য শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসতে শুরু করেছে। আবার ক্লাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, অনেক স্কুল-এলাকা নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টা করছে।

কিছু বিদ্যালয়, স্কুল-শুটারদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবে শিক্ষকদের অস্ত্র দিচ্ছে। শিক্ষকদের আগ্নেয়াস্ত্র বহন, জীবন বাঁচাবে, নাকি ভালোর চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

হাইস্কুলশিক্ষার্থী টনি উইলিয়ামস শিক্ষকদের অস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে একমত নয়। তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে। উইলিয়ামস ভয়েস অব আমেরিকাকে বলে, ‘আমাদের স্কুলগুলোতে আরও সশস্ত্র নিরাপত্তা কর্মকর্তা দরকার, আরও মেটাল ডিটেক্টর প্রয়োজন। আর প্রবেশদ্বারে তালাওয়ালা দরজার ব্যবস্থা থাকা উচিত।’ জর্জিয়ার নবম শ্রেণির ছাত্রী রেবেকা ম্যাকেঞ্জি অবশ্য বলে, ক্লাসরুমে সশস্ত্র শিক্ষক থাকলে সে আরও নিরাপদ বোধ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শিক্ষক ইউনিয়ন ন্যাশনাল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বেকি প্রিংলে বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরও অস্ত্র নিয়ে এলে, স্কুলগুলো আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতেতে পড়বে। আর অস্ত্র-সন্ত্রাস থেকে আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত কোনো কাজেই আসবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিদ্যালয়ে কম অস্ত্র দেখতে চাই। শিক্ষদের কাজ শিক্ষা দেওয়া, সশস্ত্র নিরাত্তাকর্মী হওয়া তাদের কাজ নয়।’

টেক্সাসের স্কুলে গুলির ঘটনার পর, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তিন দশকের মধ্যে প্রথম ফেডারেল বন্দুক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাসম্পর্কিত একটি আইনে স্বাক্ষর করেন। তবে, বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকান চান না, শিক্ষকেরা স্কুলে বন্দুক বহন করুক। এক জনমত জরিপ দেখা গেছে, নাগরিকদের একটা বড় অংশ, ৪৫ শতাংশই নিরাপত্তা কৌশল হিসাবে শিক্ষকদের অস্ত্র দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।

বাংলা ম্যাগাজিন এস/কে

Back to top button