সংসদ নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তারা এখন ইভিএম নিয়ে আরও বিচার-বিশ্লেষণ করতে চায়।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের ভিত্তিতে ইসি তাদের যে ১০ দফা মতামত জানিয়েছে, সেখানে এই সিদ্ধান্তহীনতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ সংলাপে ২৮টি দল অংশ নেয়। দুটি দলকে সেপ্টেম্বরের সংলাপে অংশ নেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। বিএনপিসহ ৯টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি।
ইভিএম সম্পর্কে কমিশন বলেছে, ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে নিয়ে দলগুলোয় আপত্তি ও সমর্থন রয়েছে। সার্বিক বিষয়ে এখনো স্থির কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ইসি। রাজনৈতিক দল ছাড়াও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার-বিশ্লেষণ করে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ইসি ভিন্নভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জানানো হবে।
গতকাল সোমবার ইসির পক্ষ থেকে মতামতের বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়। এটি সংলাপে অংশ নেওয়া নিবন্ধিত ২৮টি দল, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
মতামতে ভোটে অংশগ্রহণ, ইভিএম, আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনকালীন সরকার–এই চারটি বিষয়ে ইসির অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। ইসি জানায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চাইলেও কোনো দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করতে পারে না এবং সে ধরনের কোনো প্রয়াস নেবে না ইসি।
প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অসামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা অপ্রতুল হতে পারে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবটি যৌক্তিক মনে করে ইসি।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয় মনে করে ইসি। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রয়োজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্বাচনকালীন সরকারের সময়ে ইসির অধীনে ন্যস্ত করতে সংবিধানের আলোকে বিবেচিত হওয়া প্রয়োজন। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সংবিধান ও আইনে দেওয়া ক্ষমতা সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে প্রয়োগ করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে ইসি।
গণমাধ্যমে পাঠানো এ সারসংক্ষেপের বিষয়ে ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, ইসির নির্দেশনায় সংলাপে অংশ নেওয়া ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে অংশ নেওয়া ২৮টি দলকে তা পাঠানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছেও ইসির পর্যালোচনা ও মতামত পাঠানো হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল স্বাক্ষরিত ‘ইসির সঙ্গে নিবন্ধিত দলগুলোর সংলাপ থেকে প্রাপ্ত মতামত ও পরামর্শ এবং কমিশনের পর্যালোচনা ও মতামত’ শীর্ষক এ সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, মতামতগুলো কমিশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখেছে।
রাজনীতিতে গণতন্ত্রের সুস্থ চর্চা প্রয়োজন বলে নির্বাচন কমিশন অভিন্ন প্রত্যাশা পোষণ করে। এ অভিন্ন প্রত্যাশা ও বাস্তবায়নে ইসি, সরকার, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দলসহ সবার ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন।
বাংলা ম্যাগাজিন এস/কে