অধিকার ও মর্যাদাঅপরাধঢাকানরসিংদীবাংলাদেশ

উচ্চ আদালতের মন্তব্যের প্রতিবাদে ‘অহিংস অগ্নিযাত্রা’ কর্মসূচি হাইকোর্টে সামনে

নরসিংদী রেলস্টেশনে পোশাকের কারণে তরুণীকে হেনস্তা প্রসঙ্গে উচ্চ আদালতের বক্তব্যের প্রতিবাদে হাইকোর্ট মাজার গেটের সামনে ভিন্ন ধরনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন নারীরা। আজ সোমবার দুপুরে ১৪ নারী সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করে নিজেদের হাতে ও মুখে বিভিন্ন স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানান।দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া এই অবস্থান কর্মসূচি চলে প্রায় ৪৫ মিনিট।

যেসব স্লোগান লিখে তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম—‘জনপরিসরে আমার স্বাধীনতা কই’, ‘চোখ সরা’, ‘অশ্লীল লাগে’, ‘মাই বডি, মাই চয়েস’, ‘নজর সামলে রাখুন’, ‘আমি স্বাধীন’, ‘শরীর আমার, পোশাকের স্বাধীনতা আমার, আপনি বলার কে?’সেখানে তাঁরা কোনো বক্তব্য দেননি।

ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত ১৮ মে নরসিংদী রেলস্টেশনে পোশাকের কারণে গালিগালাজ ও মারধরের শিকার হন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা হলে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করে।

তরুণীকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলাকে পুলিশ ৩০ মে গ্রেপ্তার করে। গত বুধবার তরুণীকে হেনস্তার প্রসঙ্গ নিয়ে হাইকোর্ট প্রশ্ন রেখেছেন, সভ্য দেশে এমন পোশাক পরে রেলস্টেশনে যাওয়া যায় কি না। আদালত বলেছেন, ‘(ওই তরুণী) প্ল্যাটফর্মে আপত্তিকর অবস্থায় ছিল, সিডিতে দেখা যায়। এটি আপনার অধিকার? পোশাকের অধিকার?’

কর্মসূচির সংগঠক তৃষিয়া নাশতারান বলেন, নরসিংদী রেলস্টেশনে ‘যৌন হেনস্তার’ ঘটনায় অভিযুক্ত নারীর জামিন শুনানির সময় উচ্চ আদালত ভুক্তভোগী তরুণীর পোশাককে দৃষ্টিকটু বলে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন।

তৃষিয়া বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে উচ্চ আদালতের বক্তব্য যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তা যদি সত্য হয়, তবে তা নারীর সমান অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার মানদণ্ড এবং বর্তমান সরকারের নারীর ক্ষমতায়নসংক্রান্ত নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তা ছাড়া এ ধরনের মন্তব্য প্রতিক্রিয়াশীল ব্যক্তিদের উদ্বুদ্ধ করবে।আজকের কর্মসূচির বিষয়ে তৃষিয়া বলেন, ‘আমরা স্বাধীন পোশাকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান জানাতে বের হয়েছি। এটি কোনো মিছিল বা সমাবেশ নয়। আমাদের স্বাধীন অবস্থানই আমাদের প্রতিবাদ।’

এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অহিংস অগ্নিযাত্রা’। এর আহ্বায়ক ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও আন্দোলনকর্মী অপরাজিতা সংগীতা। প্রতিবাদ কর্মসূচির সংগঠক অগ্নি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সভাপতি তৃষিয়া নাশতারান। এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শিল্পী, সংগঠক, নাট্যকর্মী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, আলোকচিত্রী, গবেষক, শিক্ষক, উদ্যোক্তা, উন্নয়নকর্মী, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।

বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ

Back to top button