আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের মানুষ জ্বলছে

সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তে দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ দেশের মানুষ জ্বলছে।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিএনপির আয়োজনে ‘দুর্নীতি জ্বালানি সংকটের উৎস’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলের পক্ষ থেকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধের ওপর বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, বিশ্বের যেকোনো দেশের সরকার ধনীদের থেকে গরিবদের প্রতি বেশি মনোযোগী থাকে। গরিবরা যেনো সমাজে একটা সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে পারে তারা সেটা নিশ্চিত করে। এই দায়িত্বটা পালন করাই হলো সরকারের কাজ। বাংলাদেশে এটার উল্টোটা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব বাজারের মূল্য অনুযায়ী বাংলাদেশের বাজারে জ্বালানি তেলের যে রিটেইল প্রাইস, সেখানে সমস্ত ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করে দাম সমন্বয় করলে তেলের দাম শতকরা আট শতাংশ কমতে পারে। ৫১ শতাংশ বাড়তে পারে না। তাহলে যেটা দাঁড়াচ্ছে সেটা হলো, সরকার অন্যায়ভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছোটবেলায় আমাদের মায়েরা গান শোনাতো ‘‘খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বর্গী এলো দেশে।’’ আজকে এই সরকার বর্গীদের ভূমিকা পালন করছে। এখন আমাদের বাচ্চাদের ঘুম পারাতে হবে ‘‘আওয়ামী লীগ এলো দেশে’’ এই কথা বলে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার দেশকে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। কোথাও কথা বলতে পারবেন না, লিখতে পারবেন না, কোথাও যেতে পারবেন না।একধাপে জ্বালানি তেলের দাম ৫১ শতাংশ বাড়ানোর পরিবর্তে সরকারের অন্য বিকল্প পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল।

সরকারকে এমন পরামর্শ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, গভীর রাতে জ্বালানির দাম ব্যাপকভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অর্থনীতিকে সংকটে ফেলেছে।তিনি আরও বলেন, সরকার জনকল্যাণের চেয়ে দলীয় ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় সব খরচ চাপিয়ে দিয়ে জনগণকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এই দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা সরকারের অধীনে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা সম্ভব নয়। কারণ তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নীতিমালা তৈরি করেছে। যেখানে জ্বালানি ও বিদ্যুতকে রাজনৈতিক পণ্য বানিয়েছে। তারা জ্বলানি তেলের মূল্য বাজারভিত্তিক নির্ধারণ না করে পলিটিক্যালি নির্ধারণ করেছে। এটা এখন পলিটিক্যাল কম্যুডিটি হয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিএনপি নেতা ইসমাইল জবিউল্লাহ, মশিউর রহমান, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, সেলিম ভুঁইয়া, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, শাহ নেসারুল হক, তাইফুল ইসলাম টিপু, আকরামুল হাসান, শায়রুল কবির খান, রুমিন ফারহানাসহ আরও অনেকে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, মোস্তফা কামাল মজুমদার, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে(এ্যাব) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খানসহ আরও অনেকে।

Exit mobile version