তেলের দাম আট মাসে সর্বনিম্ন
চীনের অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমের ইস্যুতে আন্তর্জাতিক বাজারে গত মঙ্গলবার অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে। এদিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটরি (ডব্লিউটিআই) জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ৩ দশমিক ২৮ ডলার বা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে ৮৬ দশমিক ১৩ মার্কিন ডলারে নেমেছে, যা জানুয়ারির পর এই তেলের সর্বনিম্ন দাম।অন্যদিকে ইউরোপভিত্তিক ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি তেলের দামও কমেছে।
একই দিনে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ কমে ৯২ দশমিক ১২ ডলারে নেমেছে। এটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকে ব্রেন্ট ক্রুডের সর্বনিম্ন দাম।গতকাল বুধবার ডব্লিউটিআই অপরিশোধিত তেলের দাম কিঞ্চিৎ বেড়েছে। এদিন প্রতি ব্যারেল ডব্লিউটিআই তেল বিক্রি হয়েছে ৮৬ দশমিক ৫০ ডলারে। তবে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম গতকাল খানিক কমে ৯২ দশমিক শূন্য ২ ডলারে নেমেছে।যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক মাস ধরেই অপরিশোধিত তেলের দরপতনের সুবাদে গ্যাসোলিন তথা পরিশোধিত তেলের, অর্থাৎ পেট্রলের দাম কমছে। দেশটিতে পেট্রলের গ্যালনপ্রতি গড় দাম কমে এখন ৩ দশমিক ৯৫ ডলারে নেমেছে। গত মাসে মার্কিন গ্যাসোলিনের দাম ৬০ সেন্ট কমেছে।
তবে তা এখনো গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৬ সেন্ট বেশি।বিশ্বে জ্বালানি তেলের বৃহত্তম আমদানিকারক ও দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবহারকারী চীনের প্রকাশিত অর্থনৈতিক তথ্য–উপাত্ত ভালো না হওয়ায় এবং ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমের ইস্যুকে কেন্দ্র করেই মঙ্গলবার জ্বালানি তেলের দাম কমে। নির্দিষ্ট সময়সীমার ঠিক কয়েক মুহূর্ত আগে ইরান তার ‘চূড়ান্ত’ পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) লিখিত প্রতিক্রিয়া পাঠিয়েছে।
ওই চিঠিতে ইরান জানায় যে তারা একটি সুরক্ষিত চুক্তি করার কাছাকাছি ছিল। সেখানে এ রকম একটি পয়েন্ট রয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে এমন গ্যারান্টি থাকার কথা, ভবিষ্যতে কোনো মার্কিন রাষ্ট্রপতি চুক্তিটি পরিবর্তন করতে পারবেন না।বর্তমান অপরিশোধিত তেল নিয়ে মৌলিক ইস্যু হলো, ইরানের ওপর থেকে যদি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়, তাহলে প্রতিদিন বাজারে কয়েক হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল বেশি আসতে পারে।
ইরানও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে যে তারা কয়েক মাসের মধ্যে উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে চায়।আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুদিন ধরে জ্বালানির দাম ধীরে ধীরে কমছে।বিশ্বব্যাপী ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেক দেশেরই জ্বালানিসহ আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে।আর বিভিন্ন দেশের আমদানি কমায় দাম কমছে।এর ওপর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কমেছে এবং উন্নত দেশগুলোতে মন্দার আবহ শুরু হয়েছে।
বাংলা ম্যাগাজিন /এনএইচ