রাতে ঘুমানোর আগে কখনো কি ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে একটু ম্যাসাজ করেছেন? অথবা ঠোঁটে লিপবাম, হাত-পায়ে লোশন বা তেল মেখে ঘুমাতে গেছেন? তারপর সকালে উঠে ত্বক খুব সতেজ ও মসৃণ মনে হয়েছে? যাঁরা রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেন, তাঁরা এই উপকারগুলো সব সময়ই পান।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আমরা কাজে নেমে পড়ি। কাজের চাপে বা সময়ের অভাবে ত্বকের যত্নটা আর ঠিকমতো নেওয়া হয় না। বাইরে বের হলে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন বা সানব্লক মাখার কথা, সেটি হয়তো হচ্ছে না। রান্নার আগে বা চুলার আগুনের তাপে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন মাখা প্রয়োজন, সেটিও অনেক সময় করা হয়ে ওঠে না। পর্যাপ্ত পানি পান, ঠিকমতো মুখ ধোয়ার কাজেও হয়তো অবহেলা হয়ে যায়।
সারা দিনের এসব যত্নের অভাবে ত্বকের পিএইচ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন নিলে এ ভারসাম্য ফিরে আসে। আবার সারা দিনে ধুলোবালুর কারণে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। পরিষ্কার করে ঘুমালে এগুলো খুলে যায়, কমে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা। আসলে রাতে ত্বকের কোষগুলো পুনর্গঠিত হয়। আর ঘুমানোর আগে যত্ন নিলে ত্বক সুস্থ–সুন্দর হওয়ার প্রক্রিয়াটা বাড়ে বলে জানালেন বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের কর্ণধার শারমিন কচি।
ঘুম মানেই বিশ্রাম। এই বিশ্রামের সময় ত্বক অনেক কাজ করে। সারা দিন ত্বকের ওপর নানা অত্যাচার হয়। যেমন ধুলোবালু লাগা, দূষণ, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি, কাজ ও মানসিক চাপের প্রভাব ইত্যাদি। এসব কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, তা ঠিক করার কাজটা রাতে হয়। একে বলে ত্বকের রিজেনারেশন।
এ ছাড়া ঘুমের মাধ্যমে ত্বক থেকে বিষাক্ত উপাদান বের হয়। ঘুমের সময় কোলাজেন বাড়ে। কোলাজেনকে বলে ত্বকের বিউটি ফ্যাক্টর। মূলত, ঘুমের সময় ত্বক ক্লান্ত–পরিশ্রান্ত থাকলে বা ত্বকে সারা দিনের ধুলোবালু, ময়লা, মেকআপ, ঘাম জমে থাকলে ত্বক এসব কাজ ভালোভাবে করতে পারে না। এতে সৌন্দর্য হারায় ত্বক। এ জন্যই ঘুমের আগে যত্নটা জরুরি।’
রাতে ঘুমের আগে ত্বকের যত্নের আরও উপকারিতা রয়েছে। এ বিষয়ে রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি বলেন, ‘পরিষ্কার করে ডিপ ময়েশ্চারাইজার মেখে ঘুমালে ত্বক থাকে আর্দ্র ও মসৃণ।
অনেকেই আই ক্রিম মাখেন এ সময়। এটিও বেশ উপকারী। এতে চোখের নিচের কালো দাগ কমে। অনেকেরই সারা বছর হাত-পা বা ত্বক ফাটে। তারা রাতে ঘুমানোর আগে লোশন, জলপাইয়ের তেল ইত্যাদি মেখে ঘুমালে ত্বক হয় মসৃণ, সুন্দর।’
সারাদিনের ব্যস্ততায় ত্বক হারায় তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা।কর্মক্ষেত্রে পরিশ্রম, পথের ধুলাবালি, মানসিক ধকলে ত্বক লাবণ্য হারিয়ে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে। অফিস থেকে ফিরে ক্লান্তিতে ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু সুস্থ, সতেজ, প্রাণবন্ত ত্বক ধরে রাখতে কিছুটা হলেও যত্ন নিতে হবে রাতে ঘুমের আগে। এর ফলে ত্বক থাকবে কোমল ও মসৃণ।
বাংলা ম্যাগাজিন / এমএ