এক্সক্লুসিভঢাকাবাংলাদেশমানিকগঞ্জসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

একসাথে টিকটক করতে করতে প্রেম, অতঃপর বিয়ে

মীম ও রবিন। এই তরুণ-তরুণী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ভাইরাল করতে টিকটক ভিডিও বানাতে শুরু করে। কখনো প্রেমিক-প্রেমিকা আবার কখনো স্বামী-স্ত্রীর জুটিতে নিজেদের উপস্থাপন করে হরেক রকমের অভিনয়ের মাধ্যমে টিকটক বানিয়ে ছেড়ে দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

টিকটকে অভিনয় করতে গিয়ে একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করে। একপর্যায়ে গভীর প্রেম ভালোবাসার জালে দু’জনেই আবদ্ধ হয়। সিদ্ধান্ত নেয় তারা দুজন বিয়ের পিঁড়িতে বসবে। কিন্তু প্রেমিক রবিন এক সময় তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মীমকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে মীমের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। রবিন তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে মীম সোজা ছুটে আছে রবিনের বাড়িতে। বিয়ের দাবি নিয়ে ওঠে পড়ে লাগে।

মীম বলেন, রবিনের সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুবাদে ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়। এরপর সে আমাকে নিয়ে টিকটক ভিডিও বানাতে শুরু করে। কখনো প্রেমিক-প্রেমিকা আবার কখনো স্বামী-স্ত্রী সেজে টিকটক বানাতো। এরই মধ্যে রবিনের সঙ্গে আমার ভালো লাগা ও ভালোবাসার সম্পর্ক হয়।

আমরা একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করি। রবিন আমাকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কিছুদিন ধরে সে আমাকে  এড়িয়ে চলতে শুরু করে। ফোন বন্ধ করে যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়। ওর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর হওয়ায় আমার পরিবারের লোকজন আমাকে গালমন্দ করতে থাকে। একপর্যায়ে আমি সিদ্ধান্ত নেই রবিনের বাড়ি গিয়ে উঠবো। রোববার বিকালে বিয়ের দাবি নিয়ে ওর বাড়ি গিয়ে উঠি।

চারদিকে শুরু হয় টিকটক এই জুটি নিয়ে তুমুল আলোচনা। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কাকজোর গ্রামে এমন ঘটনাটি ঘটেছে। সমাধানের পথ খুঁজতে প্রেমিকের বাড়ির লোকজন মেয়েটিকে নিয়ে আশ্রয় নেয় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে।

চেয়ারম্যান ঘটনা সুরাহের জন্য উভয়পক্ষের অভিভাবকদের তলব করেন। টিকটক জুটিসহ তাদের সম্মতিতে সোমবার দুপুরে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। এতে খুশি টিকটক এই জুটি। মীম মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া গ্রামের মো. হাবিল আলীর মেয়ে।

রবিন জানায়, টিকটকের ভিডিও বানাতে গিয়ে মীমের সঙ্গে তার ভালোবাসার সম্পর্ক হয়। বিয়ের পর তারা সুখে শান্তি থাকতে চায়। বানিয়াজুরী ইউপি চেয়ারম্যান এস আর আনসারী বিল্টু বলেন, রোববার সন্ধ্যায় আমার কাছে খবর আসে কাকজোর এলাকার ইছহাক মিয়ার বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ২০-২২ বছরের এক তরুণী অবস্থান নিয়েছে।

পরে ওই তরুণীকে নিয়ে ইছহাক মিয়া ও তার এলাকার লোকজন আমার অফিসে নিয়ে আসে। মেয়েটির কাছে ঘটনা শোনার পর আমি উভয়পক্ষকে সোমবার সকালে আসতে বলি। ছেলে ও মেয়ের পাশাপাশি দুই পরিবার বিয়ের বিষয়ে একমত হলে কাজী ডেকে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক তাদের দুজনের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ সময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এতে দুই পরিবারই খুশি।

Back to top button