দুর্নীতির মামলায় মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে আরও ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির জান্তা কর্তৃপক্ষ। সু চির বিচারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেন, এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে আজ সোমবার এ খবর জানানো হয়েছে। সূত্র বলেছে, ‘দুর্নীতির চারটি অভিযোগে সু চিকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’
তবে গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় ওই ব্যক্তি তাঁর নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন। ওই সূত্র একই সঙ্গে আরও বলেছেন, অং সান সু চির শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। সর্বশেষ কারাদণ্ডের ব্যাপারে তিনি এখনো কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী সু চির বয়স এখন ৭৭ বছর। তবে সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হওয়ার পর থেকে এই প্রথম তিনি দণ্ডিত হলেন না। দুর্নীতি, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি, করোনার বিধিনিষেধ লঙ্ঘন এবং টেলিকমিউনিকেশন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাঁর মোট ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। এর পর থেকে মিয়ানমারের নির্বাচিত এই নেত্রী সামরিক বাহিনীর হেফাজতে আছেন। সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে।
সু চির বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ এনেছে জান্তা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। একাধিক মামলায় জান্তা আদালতে সু চির বিচারপ্রক্রিয়া চলমান। মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে অং সান সু চির কয়েক দশকের কারাদণ্ড হতে পারে।
পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের দেওয়া হিসাবে, অভ্যুত্থানের পর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ করেন। কয়েক মাস ধরে চলা এই বিক্ষোভে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া ১৭ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ।
সু চির মামলার শুনানিতে সাংবাদিকদের আদালতে হাজির হওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে সেনা কর্তৃপক্ষ। ফলে তাঁর মামলা এবং এর বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে গণমাধ্যমে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায় না। এমনকি সুচির কোনো আইনজীবীর পক্ষেও মামলা নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলার কোনো ধরনের অনুমতি নেই।