জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বিন্যাফৈর গ্রামের মহিলা ভণ্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে গ্লাসভরা পানি দেখেই সকল রোগের চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কথিত কবিরাজ রোকসানা বিন্যাফৈর গ্রামের সামিউল ইসলামের স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
স্বামী সামিউল বছর কয়েক আগে ভ্যানচালক ছিলেন, বর্তমানে স্ত্রীর সঙ্গে চিকিৎসায় সহায়তা করছেন। কথিত কবিরাজের সাক্ষাৎ নিতে ২০ টাকা নজরানা দিয়ে সিরিয়াল টোকেন নিতে হয়। অপরদিকে কবিরাজের কথা বিশ্বাস করে ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে এ মা। মা তারা বানু হেমড়াবাড়ী গ্রামের রাজ্জাক আকন্দের স্ত্রী। গালমন্দ করে, দেখতে পারে না এসব অভিযোগ তার ছেলে মো. আল আমিনের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কবিরাজ বাড়ির প্রতিবেশী বলেন, ছামিউল বছর কয়েক আগে ভ্যান গাড়ি চালাতেন বর্তমানে স্ত্রী ঝাড়ফুঁক, আগ্রিম কথা, কবিরাজি থেকে বহু টাকার মালিক হয়েছেন। পাকা বাড়ি, দামি মোটরসাইকেল দিয়ে চলাচল করে।
এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার সময়ে ছামিউল প্রতিবেদকের ওপর উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমাকে অনেক সময় ধরে বিরক্ত করছেন। আপনি দাঁড়ান আমি একজনকে ফোন দিচ্ছি বলে হুমকি দেন। আদারভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি এতটুকু জানি যে, সামিউলের স্ত্রী ওষুধ বিক্রি করে, তবে পানি দেখে, ভিজিট নিয়ে রোগী দেখা অগ্রিম কথা বলার বিষয়ে জানি না। এ রকম করা ঠিক না, আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।
শনিবার সকালে সরজমিন দেখা যায়, বাড়ির একটি ঘরে আগত ২৫ থেকে ৩০ জন মহিলা পুরুষ কথিত প্রতারক রোকসানা বেগমের কাছে নানা সমস্যার আর্জি দিচ্ছেন। কবিরাজ হাতে পানিভরা কাঁচের গ্লাসের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন এবং শারীরিক সমস্যা সহ তাবিজ-কবজ করেছে এমন কথা বলছেন। পাশের চেয়ারে বসা স্বামী ছামিউল রোগীর প্রয়োজনীয় গাছের শেকড় ও ইউনানি, আয়ুর্বেদিক, ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার টাকা।
এসব বিষয়ে রোকসানা বেগমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে স্বামী ছামিউল নিজেই কথা বলবেন। তিনি বলেন, স্বপ্নের মাধ্যমে আমার স্ত্রী পানি দেখে রোগ নির্ণয় করতে শিখেছে। ওষুধ বিক্রির বিষয়ে বলেন, আমরা কয়েকটি ওষুধ বিক্রি করি যেগুলো সম্পর্কে ধারণা আছে। ওষুধের প্রকৃত ব্যবহার সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ নেই।