পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বোদা উপজেলা শহরের মাইক্রোস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেলে উপজেলার ধানহাটি মাঠ থেকে মিছিল বের করেন উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মাইক্রোস্ট্যান্ড এলাকায় গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। দুই পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হন।
বিএনপি বলছে, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। অপর দিকে ছাত্রলীগ বলছে, মিছিলটি থেকে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। এতে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহত ব্যক্তিদের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের মধ্য থেকে যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম, নুর আলম পুলক ও ছাত্রদল নেতা মো. মিঠুকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া যুবদল নেতা রাজিউল ইসলামকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
বোদা উপজেলা ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আনজাম পিয়াল বলেন, তাঁরা ৬০ জনের মতো নেতা–কর্মী হেঁটে যাচ্ছিলেন। মিছিল নিয়ে যাওয়া বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা তাঁদের দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তিমূলক স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ‘৭৫–এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ এমন স্লোগান দিলে তাঁরা নিষেধ করেন।
তখন বিএনপির নেতা–কর্মীরা আগে থেকেই মিছিলে রাখা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এমনকি ইটপাটকেল মারতে থাকেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে তিনি নিজেই তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। এতে ছাত্রলীগের ছয় নেতা-কর্মী আহত হন। জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেবেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রায়হানুল আলম প্রধান মুঠোফোনে বলেন, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদে তাঁরা মিছিল করছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের শতাধিক নেতা–কর্মী তাঁদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। অতর্কিত হামলায় তাঁদের প্রায় ২৫ নেতা–কর্মী আহত হন। এর মধ্যে সাতজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় সন্ধ্যায় বলেন, বিএনপি ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।