আওয়ামী লীগবাংলাদেশরাজধানীরাজনীতি

মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী (৫ আগস্ট)। তিনি ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শাহাদাতবরণ করেন তিনি। নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের প্রথম শিকার হন শহীদ শেখ কামাল। ঘাতক বজলুল হুদা স্টেনগানের গুলিতে তাকে হত্যা করে।২০২১ সাল থেকে দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। সরকারের ‘ক’ শ্রেণিভুক্তি দিবস হিসেবে ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ‘শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী’ রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনে সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সংস্থা বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনও পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের অবদানকে স্মরণীয় রাখার লক্ষ্যে এবং তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ জন্মবার্ষিকীতে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২২’ প্রদান করা হচ্ছে।শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান শেখ কামাল। এরপর তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন।

তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন।তিনি ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে থিয়েটার আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথম সারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’।

তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

শহীদ শেখ কামাল ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলন করাতেন।১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

Back to top button