আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘বিরোধী দল বিএনপি সংসদে একটানা অনুপস্থিত থেকে নানা অযৌক্তিক কর্মসূচি দিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত করার যে খেলায় বিএনপি নেমেছে, তা জনগণই প্রত্যাখান করবে।
’শোকের মাস আগস্ট শুরু হয়েছে। শোকের মাসে সব রাজনৈতিক দলগুলো একটি সংযত আচরণ করে। রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখে। অবশ্য বিএনপি’র ক্ষেত্রে তা আলাদা। বিএনপি সবসময় শোকাবহ আগস্টকে উৎসবমুখর করতে চায়, সহিংস করতে চায় এবং আগস্টের যে শোকবিহ্বল বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশের চেহারাটা পাল্টে দিতে চায়। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিলো স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তাই আগস্টে যেনো মানুষ শোক পালন না করে, আগস্টের ভাবগাম্ভীর্য যেনো নষ্ট হয়, সেজন্য প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বিএনপি সজাগ। ৭৫ পরবর্তীতে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন জাতীয় শোক দিবস পালন করা হতো না। শোকাবহ ১৫ আগস্টে কোনো স্মরণ সভা করাও ছিল নিষিদ্ধ। এমনকি সেই সময়ে আওয়ামী লীগ যখন জাতির পিতা স্মরণে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করতো তাতেও জিয়াউর রহমান বাধা দিতেন।জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরও জাতির পিতা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ থাকেন এবং আগস্টের শোককে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ করা করা হয়নি।
১৯৯১ সালে বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসার পরও বিএনপি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করেনি এবং আগস্টের শোককে স্মরণ করেন নি। বরং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে যখন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার শুরু করে তখন বেগম খালেদা জিয়া ১৫ আগস্টকে ভুয়া জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন এবং কেক কেটে এক ধরনের বীভৎস জন্মদিন উৎসব পালনের রেওয়াজ চালু করেন বেগম খালেদা জিয়া।
দীর্ঘদিন ধরে এই কুৎসিত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উন্মত্ত প্রকাশ করেছে বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু এই নিয়ে জনগণের মধ্যে তীব্র নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সাধারন মানুষ ঘৃণাভরে এই বীভৎসতার উৎসবকে প্রত্যাখ্যান করেন। একপর্যায়ে বেগম খালেদা জিয়া অতি সম্প্রতি এই উৎসব পালন থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নেন। বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন এখন ঘটা করে বীভৎস কেক কাটার মাধ্যমে আর পালিত হয় না।কিন্তু বিএনপি যেহেতু বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মদদদাতা, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত, তাই আগস্ট মাসে বিএনপি কিছু না কিছু করতে চায়। আর এ কারণেই এবারের আগস্টের শুরু থেকেই বিএনপি মারমুখী, আক্রমণাত্মক এবং ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আগস্ট মাসের প্রথম দিনেই বিএনপি বিভিন্ন রকম কর্মসূচি নিয়েছে। এখন ভোলায় দুই জনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে রাজপথ উত্তপ্ত করতে চায়। বিএনপি নেতারা এই আগস্ট মাসে হরতালসহ নানা রকম কর্মসূচি দেওয়ারও পক্ষে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো মনে করছে।
অর্থাৎ আগস্ট মাস এলেই বিএনপি এই শোকের মাসের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার জন্য কিছু একটা করবে। এটাই যেন বিএনপির রাজনীতি। কারণ বিএনপির জন্মই হয়েছে জাতির পিতার হত্যার মধ্য দিয়ে।
তাই খুনিদের খুনিদের পক্ষাবলম্বন করা এবং বাঙালির মানসপট থেকে শোকের আবহ সরিয়ে দেওয়াই যেনো বিএনপি’র অন্যতম রাজনৈতিক লক্ষ্য। আর এ কারণেই এবারের আগস্টে বিএনপি জন্মদিনের উৎসব পালন না করার শোকে রাজনৈতিক সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগস্ট জুড়েই বিএনপি’র সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।