ফ্রান্স সফরে গিয়ে যে প্রাসাদে উঠেছেন সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, সেটিই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়ি।এককালে এমনই দাবি করেছিল ‘ফোর্বস’ পত্রিকা। আরেক মার্কিন পত্রিকা ফরচুনেরও দাবি, এটিই সবচেছে ব্যয়বহুল বাড়ি। শাতোয়া লুইস চতুর্দশ নামের ওই ভবনের অবস্থান প্যারিসের কাছে লুয়োভেসিয়েনেস এলাকায়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে তাঁর বাসভবন এলিসি প্যালেসে বৈঠক করেন সৌদির যুবরাজ। বস্তুত ইউক্রেন-যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার বিকল্প জ্বালানি সরবরাহকারী হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে এই মুহূর্তে সৌদির গুরুত্ব যথেষ্ট। ফলে বৃহস্পতিবারের বৈঠক ঘিরে উৎসাহের অন্ত ছিল না পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোর। ওই বৈঠকের পাশাপাশি যুবরাজের প্রাসাদ ঘিরেও কম কৌতূহল নেই তাদের।
৭ হাজার বর্গমিটার আয়তনের এ বাড়ি ২০১৫ সালে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরোতে (প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা) কিনেছিলেন এক ব্যক্তি। সে সময় ওই ক্রেতার নাম প্রকাশ করা হয়নি। বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফরচুন একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়ি’ আখ্যা দিয়েছিল। তবে সৌদির যুবরাজের মালিকানাধীন ওই ‘বাড়ি’টির সঙ্গে নিহত সাংবাদিক জামাল খাশোগির ক্ষীণ যোগসূত্র মিলেছে।
২০১৫ সালে সেটি কেনার তিন বছর পরই যুবরাজের বিরুদ্ধে সৌদির সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। এরপর তিনি আর ফ্রান্সে যাননি। কাকতালীয়ভাবে, ২০০৯ সালে ‘চতুর্দশ লুই’ নামে ওই প্রাসাদটির নির্মাতা ছিলেন খাশোগির খালাতো ভাই ইমাদ খাশোগি। ফ্রান্সে অভিজাত নির্মাণ কাজের ব্যবসা রয়েছে তাঁর।
যুবরাজের ওই প্রাসাদের অন্দরে বিলাসের যাবতীয় উপকরণই মজুদ রয়েছে। নাইটক্লাব, সিনেমা হল, স্কোয়াশ কোর্ট, সুইমিং পুল, সোনার পাতায় মোড়া কৃত্রিম ঝরনা, কী নেই! ভূগর্ভস্থ একটি অ্যাকারিয়ামের ধাঁচে গড়া চামড়ার সোফায় মোড়া একটি কাচের চেম্বারও রয়েছে প্রাসাদে।
এ ছাড়া তাতে দামি সুরা রাখার এলাহি বন্দোবস্তও করেছেন যুবরাজ। তাতে ৩ হাজার সুরার বোতল রাখা যায়। যুবরাজের ৫৭ একরের ওই দুর্গের ভিতরে বসবাসের জায়গা নাকি প্রায় ৫৪ হাজার বর্গফুট। প্রাসাদের দরজাগুলো প্রতিটিই সোনায় মোড়া।
ফ্রান্সের রাজপরিবারের সদস্যদের এককালের বাসভবন ভার্সেই প্যালেসের অনুকরণেই নাকি চতুর্দশ লুই শ্যাতো বা দুর্গটি গড়ে তোলা হয়েছিল। পরে সেটি কিনে নেন সৌদির যুবরাজ।গোটা প্রাসাদজুড়েই নাকি বহুমূল্য শিল্পকর্ম ছড়িয়ে রয়েছে।