ছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে তিন বছর ধরে ধর্ষণ
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বাটুপাড়া কারিগরি ও বাণিজ্যিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষক তার এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে তিন বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী (২৪) অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদ সরকারের (৪৭) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ২০১৯ জানুয়ারিতে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এর আগে তার জীবনের নানা উত্থান-পতনের করুণ কাহিনী ঘটে গেছে বলে জানান। তাই তিনি কারিগরি থেকে পড়ালেখা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত ৩ জুলাই রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এ ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী মামলা করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা-মা, ছোট ভাই ও ভগ্নিপতি উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ভুক্তভোগীসহ আরও ৮-১০ জন ছাত্রীর সঙ্গে মাসুদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার কথোপকথনের রেকর্ড উপস্থাপন করা হয়।
ভুক্তভোগী বলেন, ‘মাসে তিন দিন তার সঙ্গে মেলামেশা করতে হবে- এভাবে তিনি প্রতিনিয়ত ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন। তিনি তিন বছর ধরে ধর্ষণ করেন।’ এ বিষযে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. মাসুদ সরকারের মোবাইলে ফোনে কল করা হলে তিনি সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ফোন কেটে দেন।একই বিষয়ে বাটুপাড়া কারিগরি ও বাণিজ্যিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আরজেদ সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালের ১০ মে বেলা অনুমানিক আড়াইটার দিকে আমাকে নোটস দেবেন বলে মোবাইলে কল দিয়ে তার (শিক্ষক মাসুদের) বাসায় আসতে বলেন। আমি তার বাড়িতে যাই। এরপর তিনি আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। আমি ঘটনাটি আমার বাবা-মাকে জানাতে চাইলে তিনি তার মোবাইলে রেকর্ড করা আমার অশ্লীল ভিডিও দেখায় এবং বলে তুই কাউকে আজকের ঘটনা জানালে আমি এটা ফেসবুকে ভাইরাল করে দেবো। আমি মান-সম্মানের ভয়ে সেদিনের ঘটনা চেপে যাই এবং অসুস্থ হয়ে পড়ি।’
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী একদিন ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ দিতে থানায় এসেছিল। এসে যৌন নির্যাতনের তিন বছরের ইতিহাস তুলে ধরে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য তাকে আদালতে মামলা করতে বলেছি।’
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সানওয়ার হোসেন বলেন, ‘ওই ছাত্রী আমার কাছে এসেছিল। দিনের পর দিন ব্লাকমেইল করে ধর্ষণ করা হয়েছে এমন বেশ কিছু অডিও রেকর্ড ও ছবি সরবরাহ করে। এটা ক্রিমিনাল কেইস, তাকে থানায় কিংবা আদালতে মামলা করতে বলেছি।’