শাবিপ্রবিতে ছুরিকাঘাতে নিহত শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সিলেটে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্র বুলবুল আহমেদ হত্যার বিচার এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন একদল শিক্ষার্থী। সোমবার রাত ১১টা ২৫ মিনিটে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরের সামনে তাঁদের বিক্ষোভ চলছিল।
নিহত বুলবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাড়ি নরসিংদী জেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন। বুলবুলের সহপাঠীদের ধারণা, বিকেলের দিকে টিলায় হাঁটতে গিয়েছিলেন বুলবুল। তখন ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে তিনি ছুরিকাহত হন।
সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে গাজী–কালু টিলা লাগোয়া ‘নিউজিল্যান্ড’ এলাকায় বুলবুল ছুরিকাহত হন। পরে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাত পৌনে আটটার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুলবুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ছুটে যান। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে একদল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমাদের দাবি, নিরাপদ শাবিপ্রবি’ বলে স্লোগান দেন। ঘণ্টাখানেক প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা পুনরায় গোলচত্বরে এসে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। রাত ১১টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চলছিল।
এদিকে বুলবুল আহমেদের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। পরে রাত ১০টার দিকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উপাচার্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারে পুলিশের সহযোগিতা চান।
সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা খান বলেন, কে বা কারা বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেছে, তা এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে শিক্ষার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতায় এমন ঘটনা ঘটেছে। এই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নেই। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই শিক্ষার্থীদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল ইসলাম রাত পৌনে ১১টার দিকে বলেন, ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যথিত। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থানায় অভিযোগ করেছে। দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।