রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে আইফোন, স্যামসাং, সনিসহ বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ডের ৫৫টি মোবাইল ফোন চুরির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে চুরি করা এসব মোবাইল ফোন ঢাকার আরেক অভিজাত বিপণিবিতান বসুন্ধরা সিটির সামনে দাঁড়িয়ে বিক্রি করছিলেন তাঁরা।
আজ রমনার মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই চোর চক্রের সদস্যরা ৫ জুলাই যমুনা ফিউচার পার্কের একটি দোকানের তালা ভেঙে মোবাইল ফোনগুলো চুরি করেন। মার্কেটের লেভেল-৪–এর ব্লক–সি–এর শেফা ইন্টারন্যাশনাল নামের দোকান থেকে সেগুলো চুরি করা হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি মামলা হয়। তদন্তে দেখা যায়, তিনজন চোর দোকানের তালা ভেঙে ব্যাগভর্তি মোবাইল ফোন নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানে কোনো নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অনিক হাসান (২২), নাহিদ হাসান (১৯) ও নাদিম মোহাম্মদ সাগর (১৮)। গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত রাজধানীর বসুন্ধরা, ভাটারা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন।
প্রথম দুজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তাঁরা যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে চুরি করা মোবাইল ফোন নিয়ে বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে একটি-দুটি করে বিক্রি করেছেন। এরপর অন্য আরেকজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, মোবাইল ফোন চুরির পর তাঁরা নামীদামি মার্কেটের মোবাইল ফোনের দোকানেও বিক্রি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান আরও বলেন, একসময় গুলিস্তানসহ আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটে চোরাই মোবাইল ফোন কেনাবেচা হতো। কিন্তু এই তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা গেল, তাঁরা নামীদামি মার্কেটে এসব মোবাইল ফোন বিক্রি করেন।কারও সহায়তা ছাড়া যমুনা ফিউচার পার্কের মতো মার্কেট থেকে এভাবে মোবাইল ফোন চুরি করা সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন, তাঁরা দিনের বেলায় চুরি করেছেন। এভাবে চুরির বিষয়ে মার্কেট কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। মার্কেট কর্তৃপক্ষ যদি পুলিশের সহায়তা চান, তাহলে সহায়তা দেওয়া হবে।
গ্রেপ্তার তিনজনের কাছ থেকে দুটি সনি এক্সপেরিয়া-৮, তিনটি সনি এক্সপেরিয়া-৫, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি-এ৩২, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি-এস৯+, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি-এস১০+, একটি স্যামসাং নোট-৯, একটি স্যামসাং নোট-২০, একটি স্যামসাং নোট-১০+, তিনটি আইফোন-৮, একটি আইফোন ৮+, চারটি আইফোন-এক্স, দুটি আইফোন এক্সএস, সাতটি আইফোন এক্সআর, একটি আইফোন এক্সএস ম্যাক্স, চারটি আইফোন-১১, তিনটি আইফোন-১১ প্রো, একটি আইফোন-মিনি, একটি আইফোন-১২ প্রোসহ মোট ৪৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
হারুন অর রশীদ বলেন, এই মোবাইল ফোনগুলো ব্যবসায়ীরা সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে লাগেজ করে এনেছিলেন। সে কারণে যাঁরা এসব মোবাইল ফোন কিনছেন, তাঁরা সেগুলোর নিবন্ধন করাতে পারছেন না। এগুলো চুরি হওয়ার পর আইএমইআই নম্বর না থাকার কারণে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।