ধর্ষণ ও প্রতারণার শিকার হওয়ার পর ঘটনাটি বাবাকে জানায় মেয়ে (১৭)। ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিক হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন বাবা। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনা ঘটেছে গতকাল রোববার রাতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী ইউনিয়নের একটি গ্রামে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করে জানা যায়, বাবাকে দাফন করে ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মেয়েটি।কিশোরীর চাচা মুঠোফোনে বলেন, নিজের মেয়ের মুখে সমস্ত ঘটনা শোনার পর তাঁর ভাই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢলে পড়েন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, সে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করে। পাশের গ্রামের এক মুদিদোকানি (২২) তার মুঠোফোনের নম্বর জোগাড় করে কথাবার্তা বলতেন। এভাবে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমনকি মাঝেমধ্যে কর্মস্থলে গিয়েও কিশোরীর সঙ্গে দেখা করে আসতেন ওই ব্যবসায়ী।
গত রমজানের ঈদের ছুটিতে ওই কিশোরী বাড়িতে আসে। এরপর ওই ব্যবসায়ী মেয়েটিকে বিয়ে করবে বলে জানান। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে কিশোরীকে নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে যাওয়ার পর ওই ব্যবসায়ী তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন।
কিশোরী আরও জানায়, এ ঘটনার পর কর্মস্থল থেকে ছুটিতে বাড়িতে এলে ওই ব্যবসায়ী তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো মেলামেশা করতেন, কিন্তু বিয়ে করেননি। একপর্যায়ে ওই ব্যবসায়ী যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। কিশোরী জানায়, সে ব্যবসায়ীর গ্রামে খোঁজ করেও তাঁকে পায়নি। তখন বুঝতে পারে, সে প্রতারণার শিকার হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বাড়িতে খোঁজ নিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। আঠারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুবের আলম কবির বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। এটি খুবই দুঃখজনক। অপরাধীর বিচার হওয়া দরকার।ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী ইউনিয়নের রায়েরবাজার তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মোল্লা মোজাহিদুর রহমান জানান, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে তিনি ওই কিশোরীর বাড়িতে গিয়েছিলেন।কিশোরীর বাবা মারা যাওয়ায় বাড়িতে শোকের পরিবেশ ছিল।ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, কিশোরীর পরিবারকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল রাত নয়টার দিকে কিশোরী তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ঘটনাটি জানায়। এ সময় কিশোরীর বাবাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনা শুনে তিনি চিৎকার দিয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন। পরে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।