রাজবাড়ীর বিনোদপুরের রাসা চৌধুরী টাওয়ারের সপ্তম তলা থেকে পড়ে লাকী আক্তার (২৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি দুই সন্তানের মা। লাকীর মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান লাকীর দেবর বাবু। পরে সেখান থেকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।লাকী দুই সন্তানের মা। তিনি সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য রাশেদুল হক চৌধুরী অমির স্ত্রী।
লাকীর মায়ের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।তবে অমির স্বজনদের দাবি, পারিবারিক কলহের জের ধরে সপ্তম তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন লাকী।
এ ঘটনায় লাকীর মা ইসমত আরা বেগম রাজবাড়ী সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।সরেজমিনে রাশা টাওয়ারে গিয়ে দেখা যায়, ওই ভবন থেকে যে কেউ যেকোনো সময় লাফিয়ে নিচে পড়তে পারে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অমির মামা লিয়াকত আলী চৌধুরী ও খালা মঞ্জু চৌধুরী বলেন, তাদের পারিবারিক কলহ প্রায়ই লাগে। গত রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে রেগে রুম থেকে বাইরে আসেন লাকী। কিছু সময় পর ভবনের নিচে চিৎকার শুনে গিয়ে দেখতে পান, লাকি লাফিয়ে নিচে তৈলের ড্রামের ওপর পড়েছেন।
পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফরিদপুর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। তবে হত্যার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা আত্মহত্যা। রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
লাকীর মা ইসমত আরা বেগম বলেন, ‘১০ বছর আগে লাকীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে অমির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে অমি নেশা ও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে লাকীর ওপর অমানসিক নির্যাতন করত। প্রায়ই গভীর রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ফিরে যৌতুক দাবি করে লাকীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে সালিস হয়।’
ইসমত আরা বেগম আরও বলেন, ‘পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে ও যৌতুকের দাবিতে গতকাল রাত ১০টার দিকে লাকিকে মারপিট করে তার স্বামী। পরে হত্যার উদ্দেশ্যে বিনোদপুর রাশা টাওয়ারের খোরশেদ প্লাজার সপ্তম তলা ভবনের গ্রিলবিহীন ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়। হত্যা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে অমি।’