করোনার একটি বৈশ্বিক ঢেউ আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এ বিষয়ক প্রস্তুতি নিয়ে রাখারও আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘভিত্তিক এই স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা।
ভাইরাসটির যে পরিবর্তিত ধরনের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই বিএ পয়েন্ট ফাইভ ডেল্টা, ওমিক্রনসহ আগের বিভিন্ন ধরনের তুলনায় বেশি বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) শীর্ষ বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথান।
বিএ পয়েন্ট ফাইভ করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক পরিবর্তিত ধরণ ওমিক্রনের একটি উপধরন। তবে এই ভাইরাসটির মারণক্ষমতা অন্যান্য পরিবর্তিত ধরনের তুলনায় বেশি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫৬ কোটি ১৭ লাখ ৮৫ হাজার ৯৬১ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৩ জনের।গত আড়াই বছরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ৫৩ কোটি ৪৬ লাখ ৬৭ হাজার ৯৬ জন।
বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় ডব্লিউএইচওর শীর্ষ বিজ্ঞানী বলেন, ‘গত কয়েক মাস স্থিমিত থাকার পর সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে ফের করোনার উত্থান আমরা লক্ষ্য করছি। প্রতিদিনই এই রোগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বিএ পয়েন্ট ফাইভ নামের উপধরনটির প্রভাব, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আমাদের উদাসীনতা, বিশ্বজুড়ে করোনা টিকার বণ্টনে চরম অসমতা এই উত্থানের কারণ।’
‘বর্তমানে করোনার দৈনিক সংক্রমণ-মৃত্যুর যে পরিস্থিতি— এটি অব্যাহত থাকলে সামনেই যে করোনার একটি বৈশ্বিক ঢেউ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে— তা নিশ্চিত। অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে এই রোগে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যু।’
‘সম্ভাব্য এই বিপর্যয়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আমরা সব সদস্যরাষ্ট্রকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’ পৃথক একটি টুইটবার্তায় সৌম্য স্বামীনাথান জানান, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলের বিভিন্ন দেশ, ও ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে দৈনিক সংক্রমণ-মৃত্যুতে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সংক্রমণ-মৃত্যুর হিসেবে বর্তমানে শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স, জার্মানিসহ গোটা ইউরোপ।