রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর ঝাউলাহাটি এলাকার প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক মো. সাগর। স্ত্রী ও সাত মাস বয়সের শিশুকে নিয়ে তাঁদের সংসার। গত ১২ জুলাই সাগরের বড় ভাই মো. শাহজাহান (২৮) এক দম্পতিকে তাঁদের বাসায় নিয়ে আসেন এক রাতের জন্য আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে। ভাইয়ের অনুরোধ রাখেন সাগর। কিন্তু অচেনা ওই দম্পতিকে আশ্রয় দেওয়াই তাঁদের কাল হলো। সকালে উঠে দেখেন তাঁদের সাত মাসের সন্তান নিয়ে পালিয়েছে সেই দম্পতি।
র্যাব-১০ এর ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া কর্মকর্তা জানান, বিপদে পড়ে আশ্রয় চাওয়ার নামে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে প্রবেশ করে শিশু চুরি করত তারা। মুন্নি ও সুমন গত ১৪ তারিখ দুপুরের দিকে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে সাত মাসের শিশুকে চুরি করে পালিয়ে যায়। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে কামরাঙ্গীরচর থানার হুজুরপাড়া বেইলি রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশুকে উদ্ধার ও জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সাগরের বড় ভাই মো. শাহজাহান (২৮) পেশায় রিকশাচালক। আশ্রয়প্রার্থী দম্পতি তাঁকে জানিয়েছিল, তাঁরা বিপদে পড়েছেন। তাঁদের এক রাতের জন্য আশ্রয় প্রয়োজন। ওই দম্পতির আকুতিতে মন গলে যায় শাহজাহানের। পরে তিনি ছোট ভাইয়ের বাসায় তাঁদের রেখে যান।সাগরের বাসায় এক রাত কাটিয়ে পরের দিনই তাদের সাত মাস বয়সী বাচ্চাকে নিয়ে সটকে পড়েন তাঁরা।
পরে লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া শিশুসহ চোর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মুন্নি (১৮) ও মো. সুমন (২০)। স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেওয়া এ দুজন দীর্ঘদিন ধরে শিশু চুরির সঙ্গে জড়িত। আজ শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১০ এর ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া কর্মকর্তা এএসপি এনায়েত কবির শোয়েব।
গ্রেপ্তার মুন্নি ও সুমন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছে, তারা শিশু চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। স্বামী-স্ত্রী পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে কামরাঙ্গীরচরসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাসা-বাড়ি থেকে শিশু চুরি করে আসছিল। চুরি করা শিশুদের ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দিত।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।