সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘ঋণের দায়ের দেউলিয়া হতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ কোটি টাকা। সুদসহ এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তখন দেশের অবস্থা ভয়াবহ হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা অনেক মিল। কিন্তু ২০ বছরের গৃহযুদ্ধেও শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়নি। যুদ্ধের পর মেগাপ্রকল্পের জন্য নেওয়া বিদেশি ঋণের বোঝা টানতে গিয়ে দেশটি আজ দেউলিয়া। আবার শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশে একই রাজনৈতিক বাস্তবতা। দুটি দেশেই কোথাও জবাবদিহিতা নেই। এ কারণেই বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার মত ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে।’
দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে শুক্রবার জুরাইন রেলগেটে শ্যামপুর-কদমতলী থানা জাতীয় পার্টির স্মরণ সমাবেশে এসব কথা বলেন বিরোধী দলের উপনেতা জিএম কাদের।জাপার কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভ রায়, মীর আবদুস সবুর আসুদ প্রমুখ।
জিএম কাদের বলেন, ‘ঋণ নির্ভর বাজেট হয়েছে। গত অর্থবছরেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হয়নি। এ বছরও না হলে ঋণ করে সরকারি কর্মচারীরেদর বেতন দিতে হবে সরকারকে। ব্যাংকে টাকা থাকবে না। ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছে দেশ। এ পরিস্থিতিতে ভর্তুকি দিয়ে হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’
জি এম কাদের বলেন, ‘যদি ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় আর সেখান থেকে প্রতিদিন এক কোটি টাকা হারে বছরে ৩৬৫ কোটি টাকা আয় হয়, তাহলে শুধু আসল পরিশোধ করতে ৯০ বছর লেগে যাবে। আবার সুদের টাকাও পরিশোধ করতে হবে।
সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে গিয়েই শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গেছে।‘ঋণনির্ভরতার কারণে দেশের ব্যাংকে টাকা নেই। পরিচালন ব্যয় না কমালে ব্যাংক থেকে ঋণ করে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। এ কারণেই দেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ‘দুটি দলই দুর্নীতি করেছে। আওয়ামী লীগ প্রথম দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এরপর বিএনপি পরপর চারবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অপবাদ দিয়ে বলে এরশাদ নাকি দুর্নীতি করেছেন। কিন্তু তিনি ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। কেউ তার দুর্নীতির প্রমাণ করতে পারেনি।’