তীব্র গরমে পুড়ছে ইউরোপ। বেশ কয়েকটি দেশে প্রবল বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্রান্সের শহর ও গ্রামের বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছেন। খবর বিবিসি।পশ্চিম স্পেনের বেশ কিছু শহর জনমানবহীন হয়ে পড়েছে। এসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল গিরোনদে থেকে গত কয়েক দিনে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্পেন ও পর্তুগালে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। বেশ কয়েকটি এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এই দুই দেশে গত কয়েক দিনে দাবদাহে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ফ্রান্সের অগ্নিনির্বাপক ফেডারেশনের প্রধান জেনারেল গরি অ্যালিয়ন নাগরিক সুরক্ষায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তায় ফায়ার সার্ভিস বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব মোকাবিলা করছে প্রতিদিন। উষ্ণায়নের প্রভাব ২০৩০ সালে নয় বরং এখনই অনুভূত হচ্ছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) শুক্রবার বলেছে, তাপপ্রবাহে শহর ও নগরগুলোর বাতাসের মান আরও খারাপ হতে পারে। ডব্লিউএমওর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লোরেনেজো লাব্রাডোর জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্থিতিশীল এবং স্থবির বায়ুমণ্ডল দূষণকারী কণা ও পদার্থ ঠেকাতে ঢাকনা হিসেবে কাজ করে। এর ফলে বাতাসের মান খারাপ হয়, স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, বিশেষ করে শারীরিকভাবে নাজুক মানুষের ওপর।
স্পেনের পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে ১৭টি দাবানল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছে তারা। তবে এই তাপপ্রবাহ মানুষের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর যে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, স্পেনে আজ শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।কার্লোস-থ্রি হেলথ ইনস্টিটিউট গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, গত রবি ও সোমবার সর্বশেষ তাপপ্রবাহের প্রথম দুই দিনে কমপক্ষে ৪৩ জন মারা গেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিষেবা দক্ষিণ ইউরোপ ও মরক্কোজুড়ে সবচেয়ে বড় আগুনের ঝুঁকির আশঙ্কা করে একটি মানচিত্র টুইটারে পোস্ট করেছে।পর্তুগালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ৭ জুলাই থেকে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ২৩৮ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু রেকর্ড করেছেন। তীব্র গরম ও অতিরিক্ত শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য এত মানুষ মারা যাচ্ছেন বলে তাঁরা মনে করছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ, শিশু ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা।