ভোলার সাগরমোহনায় একটি গ্রানাইট পাথরবোঝাই বিদেশি নৌযান ভেসে এসেছে
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের চর নিজামের পূর্ব দিকে সাগরমোহনায় একটি বিদেশি নৌযান ভেসে এসেছে। এটি দেখতে ফেরির মতো। চারপাশ দিয়ে লোহার ঘের দেওয়া। মধ্যে রয়েছে পাথর ভাঙার যন্ত্র। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গ্রানাইট পাথরবোঝাই নৌযানটি গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ চর নিজামের পূর্ব সাগরমোহনার জলসীমানায় ভাসতে ভাসতে ডুবোচরে আটকে যায়। তখন স্থানীয় জেলেরা জনমানবহীন নৌযানটি দেখতে ভিড় করেন। অনেকটা ভুতুড়ে ও মরিচা পড়া নৌযানটি জেলেরা একনজর দেখে ফিরে আসেন। জেলেরা জানান, বিশাল আকৃতির এই নৌযানে পাথর, ভেকু ও পাথর ভাঙার যন্ত্র রয়েছে।
নৌযানটিকে জাহাজ হিসেবে উল্লেখ করে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান জানান, এটি কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের। সেখানকার একটি উদ্ধারকারী দল নৌযানটি উদ্ধার করতে আসছে। সাগর উত্তাল থাকার কারণে রাতে দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ায় নৌযানটি ভাসতে ভাসতে চলে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাহাজটি মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উন্নয়নকাজের পাথর সরবরাহ করছিল।
জেলেদের মাধ্যমে নৌযানটির বিষয়ে জানতে পেরেছেন বলে জানান ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল সালাম হাওলাদার। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ঢালচর ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী চর নিজামের কাছাকাছি সাগরমোহনায় বিশাল আকৃতির নৌযানটি ভেসে আসতে দেখেন স্থানীয় জেলেরা।
নদী উত্তাল থাকায় ও এটি দেখতে ভুতুড়ে হওয়ায় কেউ সেখানে যেতে সাহস পাচ্ছিলেন না। পরে বিকেলের দিকে কয়েকজন জেলে সেখানে গিয়ে দেখেন, জনমানবহীন নৌযানটি দেখতে অনেকটা ফেরির মতো বার্জ। পরে বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চরফ্যাশনের ইউএনও বলেন, জাহাজের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ভোলা প্রশাসককে জানালে খবর আসে, জাহাজটি কক্সবাজার এলাকার মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের। সাগর উত্তাল থাকার কারণে ভাসতে ভাসতে এখানে ভেসে এসেছে। সেখান থেকে একটি উদ্ধারকারী দল আসছে জাহাজটি উদ্ধার করতে।
চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটি জাহাজের সঙ্গে থাকা বার্জ। এটার গায়ে নাম লেখা রয়েছে ‘আল কুবতান’। ধারণা করা হচ্ছে, এটি কোনো একটি জাহাজের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। কোনো দুর্ঘটনার কারণে জাহাজের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভাসতে ভাসতে এখানে চলে এসেছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে। সাগরমোহনা উত্তাল থাকায় সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি। শুক্রবার কোস্টগার্ডের সদস্যরা সেখানে রওনা হয়েছেন।