কাজ দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে এক তরুণের দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় কাজ দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে মো. হাদিউল্লাহ (২৩) নামের এক তরুণের দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নোয়াকান্দা গ্রামের একটি কলাবাগানে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত দুইটার পর ওই যুবকের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। সেখানে দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ওই তরুণকে সড়কে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। তখন ওই যুবকের দুই হাত দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। স্থানীয় লোকজন তাঁর দুই হাত কাপড় দিয়ে বেঁধে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে তাঁকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাদিউল্লাহ নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বাড়িগাও গ্রামের মো. খোরশেদ মিয়ার ছেলে। তিনি শিবপুরের কলেজগেট এলাকার একটি মিষ্টির দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। কাজ দেওয়ার কথা বলে তাঁকে মুঠোফোনে শিবপুর থেকে পলাশ উপজেলায় ডেকে আনা হয়।

কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়া যুবক হাদিউল্লাহ বলেন, প্রায় ১৫ দিন আগে তাঁর সঙ্গে দূরসম্পর্কের চাচি বৃষ্টি আক্তারের ঝগড়া হয়। গতকাল দুপুরে বৃষ্টির ভগ্নিপতি জালাল মিয়া মুঠোফোনে তাঁকে কাজ দেওয়ার কথা বলে সন্ধ্যায় দেখা করতে বলেন। জালাল নোয়াকান্দা গ্রামের আক্কাছ আলীর ছেলে। তাঁর কথামতো সন্ধ্যায় নোয়াকান্দা গ্রামে যান তিনি।

কথাবার্তার পর রাত ১২টার দিকে জালাল ও তাঁর ভাতিজা সাজ্জাত স্থানীয় নিমতলা এলাকার একটি কলাবাগানে নিয়ে যান তাঁকে। তখন বৃষ্টির সঙ্গে ঝগড়ার বিষয়ে জানতে চান তাঁরা।হাদিউল্লাহ আরও বলেন, ‘কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁরা দুজন মিলে আমাকে শাড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন এবং দা দিয়ে প্রথমে বাঁ হাতের কবজি কাটেন জালাল। একই কায়দায় ডান হাতের কবজি আলাদা করেন তিনি। পরে ওই অবস্থায় সামনের সড়কে আমাকে ফেলে চলে যান। তখন আমার চিৎকারে আশপাশের বাড়িঘরের লোকজন সেখানে এসে আমাকে উদ্ধার করেন।’

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ওই তরুণকে শিবপুর থেকে ডেকে এনে দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত জালাল একজন চিহ্নিত ডাকাত ও কয়েকটি মামলার পলাতক আসামি। তাঁর নামে পলাশসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা আছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, রাত চারটার দিকে দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ওই তরুণকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন এক পুলিশ সদস্য। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু ওই তরুণের কোনো স্বজন না আসায় তাঁরা তাঁকে হাসপাতালেই ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

Exit mobile version