উজানের ঢলে দুপুরের পর থেকে হু হু করে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলের অন্য নদ-নদীগুলোরও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে কাউনিয়া, গংগাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ও তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘আজ সোমবার বেলা ১২টার পর থেকে হু হু করে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। ১২টায় ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার যা বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই সময়ে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে ২৮ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৯ দশমিক ২০) যা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেল ভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ সব প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অথবা কোনো কোনো স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এতে রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’
এর আগে সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫২ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার যা বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে।এ ছাড়া আজ দুপুর ১২টায় ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা পয়েন্টে ২২ দশমিক ০৪ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২১ দশমিক ৭০), যমুনেশ্বরী নদীর পানি রংপুরের বদরগঞ্জ পয়েন্টে ৩০ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৩২ দশমিক ১৬), করতোয়া নদীর পানি রহিমাপুর পয়েন্টে ১৮ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২০ দশমিক ১৫) উচ্চতায় প্রবাহ রেকর্ড করা হয়।
কাউনিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিইও) আহসান হাবিব সরকার বলেন, ‘এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি। তবে পাউবো বন্যার শঙ্কার সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। আমাদের সরকারিভাবে সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। তবে বৃষ্টির কারণে কিছু নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা রয়েছে।’
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘তিস্তা অববাহিকার উজানে দ্রুতগতিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া এবং পীরগাছা উপজেলায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে। নদী অববাহিকায় বা চরাঞ্চলে বসবাসরত জনসাধারণকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’