নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস কিসের ডাক্তার সেটি জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে একজন ডক্টর আছেন। ড. ইউনূস। উনি পশুর ডাক্তার? না মাছের ডাক্তার, না গরুর ডাক্তার? না বাংলাদেশের মানুষের সর্বনাশার ডাক্তার।’
শেখ সেলিম বলেন, ‘উনি (ড. ইউনূস) নাকি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। যত অশান্তি উনি বাংলাদেশে ঘটানোর জন্য করেছেন। উনি দেশের পাই পয়সার উন্নতিও করেননি। উনি ক্ষতি করে গেছেন। সুদ খেয়েছেন। একজন সুদখোর।’‘ড. ইউনূস সাহেব আর বাংলাদেশে কিছু কথিত বুদ্ধিজীবী আছে। তারা সব সময় নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গির। বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাক এরা কোনো দিন চিন্তা করে না।’ যোগ করে সেলিম।
আজ রোববার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন শেখ সেলিম। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।পদ্মা সেতু প্রকল্পে ড. ইউনূসের ভূমিকা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই এমপি বলেন, ‘২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিভিন্ন দাতা দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন (প্রধানমন্ত্রী)। জাপান, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থারা রাজি নয়। কিন্তু মাঝখানে একজন ডক্টর এসে ঢুকল। তার বিশ্বব্যাংক এসে বলল দুর্নীতি হয়েছে। কী দুর্নীতি হয়েছে? এক পয়সা দেয়নি। একটি টাকাও দেয়নি, বলে দুর্নীতি হয়েছে। কী বিচিত্র! এরা মানুষের শত্রু।’
করোনা টিকা কিনতে বিএনপির দুর্নীতির অভিযোগের জবাবে শেখ সেলিম বলেন, ‘বিএনপি সবকিছুতেই দুর্নীতি খোঁজে। ওদের মাথার ভেতরে দুর্নীতি। ওদের রক্তে দুর্নীতি। সে জন্য ওরা সবকিছুতেই দুর্নীতি দেখে। অন্য কিছু চোখে ওদের পড়ে না।’
অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে শেখ সেলিম বলেন, ‘উনি (ড. ইউনূস) যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে দিয়েছেন, এই টাকা কোত্থেকে দিয়েছেন তা তদন্ত করুন। এটা মানি লন্ডারিংয়ের টাকা। বিশ্বব্যাংকের কাছে ও (ড. ইউনূস) বিক্রি। আমাদের কিছু বিএনপি ও বিদেশিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে পদ্মা সেতু বন্ধের চেষ্টা করেছে।’
বিএনপি বিদেশিদের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নালিশ করে। দেশের ভাবমূর্তি ও ইজ্জত নষ্ট করে। আর বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়— অভিযোগ করে শেখ সেলিম বলেন, ‘বিদেশিরা বাংলাদেশের কোনো কিছু করতে পারবে না। বাংলাদেশের ভাগ্য এ দেশের জনগণ নিয়ন্ত্রণ করবে। বিদেশিরা নিয়ন্ত্রণ করবে না। বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশে যে রকম সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হয়। বাংলাদেশেও সেইভাবে নির্বাচন হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে এমপি সেলিম বলেন, ‘বিএনপি বলে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে। শ্রীলঙ্কা হলে কী তারা খুশি হবে? বাংলাদেশ ধ্বংস হলে ওরা খুশি হয়। তোরা কী বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাবি? বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি খুব মজবুত। বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না। প্রধানমন্ত্রী যে ধারায় উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন তাতে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হবে। মালয়েশিয়া ও সুইজারল্যান্ড হবে।’
বিএনপি কথায় কথায় বলে সরকারকে টেনে নামাবে— উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, ‘ওরা আওয়ামী লীগকে ২০০৯ সাল থেকে টানা আরম্ভ করেছে। তোরা যত টানবি আমাদের ক্ষমতা তত বাড়বে। আজকে ২০২২ সালে এসেছি। আরেকবার টান দিলে আমরা ২০৫০ সালে চলে যাব। তোরা থাক ব্যাটা!’