ড্রাইভারের ছদ্মবেশে থাকা রাজধানীর উত্তরায় এক সিরিয়াল ধর্ষক আটক
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় স্কুলছাত্রীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মো. শামীম হোসেন মৃধা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর সদস্যরা। শামীম আগেও বহুবার একই অপরাধ করেছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সে একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। বিভিন্ন এলাকায় নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ নানা অপরাধ করে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল ও খুলনা এলাকায় আত্মগোপনে চলে যেত। গ্রেফতার এড়াতে এক জায়গায় বেশি দিন থাকত না। আত্মগোপনে থাকা অবস্থাতেও সে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। পিরোজপুরের ঘটনায় গত ১২ জুন ভাণ্ডারিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন সেই ছাত্রীর মা।
গতকাল ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এসব কথা বলেন। র্যাব মুখপাত্র বলেন, শামীম ঢাকার বাবুবাজার ও গাবতলী এলাকায় অটোরিকশা এবং প্রাইভেট কার চালক হিসেবে কাজ করে। ১৬ বছর বয়সে সে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক সেবন ও মাদক কেনাবেচার মাধ্যমে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে।
র্যাব ধর্ষিতা ছাত্রীর মায়ের মামলার বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে শামীমের সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে মেয়েটিকে ধারালো অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় শামীম। ঘটনার পর পরই সে ঢাকায় আত্মগোপন করে। শামীম আগেও একই অপরাধ করেছে।
অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা লোকলজ্জা ও সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে মামলা করা থেকে বিরত ছিল। ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা ও মাদক বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগে শামীমের বিরুদ্ধে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে এবং বিভিন্ন মেয়াদে সে ৪-৫ বার সাজাও খেটেছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৬টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। শামীমের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায়।
র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি ভাণ্ডারিয়া উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে রাতে ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে শামীম। ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর একই উপজেলার আরেক ছাত্রীকে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রামদা দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। একইভাবে ২০২১ সালে ১০ অক্টোবর আরেক মাদরাসার ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করে।