নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বক্তাবলী থেকে দুই শিশু সন্তানকে ঘুম পাড়িয়ে উধাও হয়ে গেছে রওশানা আক্তার সিনথিয়া নামে এক মা। সাথে ওই নারী নিয়ে গেছে তার সৌদি আরব প্রবাসী স্বামীর জমানো টাকা ও অলংকার। এ ঘটনায় সৌদি প্রবাসী স্বামী আজিজুল ইসলাম বিদেশ থেকে ফিরে এসে স্ত্রীকে ফিরে পেতে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।। ধারণা করা হচ্ছে টিকটকের ফাঁদে পড়ে কোন চক্রের হাতে পড়েছে ওই নারী।
শনিবার বিকালে স্বামী আজিজুল গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তার বাচ্চা দুটো মার জন্য কাঁদছে। বার বার বলছে মাকে এনে দিতে। আমার জীবনের সব উপার্জন নিয়া সে পালায় গেছে স্ত্রী। তাতে আমার দুঃখ নেই। কিন্তু বাচ্চাগুলোর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। বাচ্চাগুলোর দিকে তাকিয়ে আমিও চোখের পানি রাখতে পারছি না।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায়, ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের মধ্য নগর এলাকার সৌদি প্রবাসী আজিজুলের সাথে ১০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিলো সিনথিয়ার। তার বাবার বাড়ি চরকাশিপুর এলাকায়। তাদের সংসারে ৮ বছরের সাজিত ও ৫ বছরের সাইফ নামে দুই ছেলে রয়েছে। গত কয়েক মাস আগেও তাদের সুখের সংসার ছিল।
গত ৭ জুন দুপুরে স্বামী আজিজুল জানতে পারেন ভোরে তার স্ত্রী সন্তানদের ঘুমে রেখে ঘর থেকে পালিয়ে গেছেন। এ খবর শুনে তিনি আর সৌদিতে থেকে দেশে ফিরে আসেন। গত কয়েকদিন তার স্ত্রীকে খুঁজছেন বিভিন্ন জায়গায়। তাকে না পেয়ে পরে ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করেছেন। তবে ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি স্ত্রী সিনথিয়ার।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এএসআই হাবিবুর রহমান জানান, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ওই গৃহবধূর সন্ধান করতে। আমরা তার বাবার বাড়িতে গিয়ে তার চার ভাইসহ স্বজনদের সাথেও কথা বলেছি। কিন্তু তারা কোন তথ্য দিতে পারেনি। ঘটনাটি পরকীয়া বলে আমরা প্রাথমিক ভাবে ধারণা করেছিলেন। পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রেজাউল হক দিপু জানান, ঘটনাটি ৭ -৮ দিন আগের। এখনো খোঁজ পাইনি ওই গৃহবধূর। ওই নারী কোন চক্রের ফাঁদে পড়েছে নাকি অন্য কোন ঘটনা রয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি তার সন্ধানের চেষ্টা চলছে।
স্বামী আজিজুল আরও জানান, সিনথিয়া অনেক আগে থেকেই টিকটকে আসক্ত ছিল। সেখানে এক ছেলের সাথে তার অনেক টিকটক আছে। ওই ছেলের সাথে তার স্ত্রীকে প্রায় ভিডিও কলে কথা বলতো দেখতো শিশু ছেলেরা। গত ৩ জুন তাদের বাড়িতে একটি মেয়ে এসেছিলেন। সে তিনদিন সেখানে অবস্থান করে চলে যায়। পরদিন ভোরেই সিনথিয়া ঘর ছাড়ে। শুনেছি ওই ছেলের বাড়ি সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলায় তবে তাকে অনেকে টিকটক আতিফ নামে চেনে।
তিনি বলেন, আমি এসব কিছুই জানতাম না। বাড়িতে ফিরে প্রতিবেশীদের কাছে সব জানছি। আমার মনে হয় ওই ছেলে আমার বাড়িতে সেই মেয়ে পাঠিয়ে ছিল আমার স্ত্রীকে ফাঁদে ফেলতে। আমার চিন্তা লাগে সিনথিয়া যদি কোন প্রতারক চক্রের কাছে পড়ে যায় তাহলে ওর জীবন শেষ হয়ে যাবে।