চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনসহ ১৩টি স্টেশন থেকে প্রথম দিনের মতো মোট ৩২ হাজার ৩৯০ কেজি আম নিয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করেছে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’।সোমবার বিকেল চারটায় ট্রেনটি রহনপুর স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রাজশাহী স্টেশনে ফিতা কেটে ও পতাকা উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
১৩টি স্টেশন থেকে ১ হাজার ৫৩৬টি ক্রেটে মোট ৩২ হাজার ৩৯০ কেজি আম নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। এই পরিমাণ আমের পরিবহনে রেলওয়ের আয় হয়েছে ৩৭ হাজার ৬৪৩ টাকা।এর আগে বিকেলে প্রথমে রহনপুরে ফিতা কেটে এ ট্রেনের উদ্বোধন করেন রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস ও গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা খাতুনসহ আমচাষি, ব্যবসায়ীরা।
ট্রেনটি রহনপুর স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকেলে চারটায় এবং রাজশাহী থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে উল্লেখ করে রেলওয়ে সূত্র জানায়, সোমবার প্রথম দিন ট্রেনটিতে রহনপুর স্টেশন থেকে ২ হাজার ৬৭৫ কেজি, নাচোল থেকে ২৮০ কেজি, নিজামপুর থেকে ৪৫৫ কেজি, আমনুরা জংশন থেকে ২২০ কেজি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৫ হাজার ৪২৫ কেজি, আমনুরা বাইপাস থেকে ৪১৫ কেজি, কাকান হাট থেকে ৬২৫ কেজি, রাজশাহী স্টেশন থেকে ৩ হাজার ৯২০ কেজি, সরদহ রোড থেকে ১ হাজার ৯৬৫ কেজি, আড়ানী স্টেশন থেকে ১১ হাজার ৩৯০ কেজি, লোকমানপুর থেকে ১ হাজার ৮৬০ কেজি, আবদুলপুর স্টেশন থেকে ২ হাজার ৬১০ কেজি ও আজিম নগর স্টেশন থেকে ৫৫০ কেজি আম নেওয়া হয়।
বিশেষ এ ট্রেনে আম ছাড়াও লিচু, মৌসুমি ফল, ডিমসহ সব ধরনের কৃষিপণ্য কম খরচে ঢাকায় নেওয়া যাবে উল্লেখ করে রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ পরিবহনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় আম নিতে খরচ পড়বে কেজিপ্রতি ১ টাকা ৩১ পয়সা এবং রাজশাহী থেকে ১ টাকা ১৭ পয়সা।কুরিয়ার সার্ভিসে এক টন আম ঢাকায় নিতে খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা। আর ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে খরচ পড়বে মাত্র ১ হাজার ১১৭ টাকা। কত দিন ট্রেনটি চলবে, তা নির্ভর করছে পণ্য পাওয়ার ওপর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশনের মাস্টার শহীদুল আলম বলেন, সন্ধ্যা ছয়টায় এখান থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। এতে ছয়টি ওয়াগন রয়েছে। প্রতি ওয়াগনে ৪৩ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহন করা যাবে।বিশেষ এ ট্রেন দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আম ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান রহনপুর আম আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ট্রেনটি যেন শেষ পর্যন্ত চালু থাকে, এটাই অনুরোধ।
স্পেশাল ট্রেনে ট্রাকের চাইতে ভাড়া খুব কম উল্লেখ করে আম ব্যবসায়ী বাইরুল ইসলাম বলেন, ‘এতে আমাদের অনেক সুবিধা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আম ডেলিভারি দিতে পারি।’চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনেও একইভাবে ফিতা কেটে উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়। রেলের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এ কে এম নূরুল আলম এর উদ্বোধন করেন।