অবশেষে ঘটনার তিন দিন পর নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এক অডিও বার্তায় তিনি জায়েদ খান ও ওমর সানী প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য জানালেন। সম্প্রতি মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ছেলের বিয়েতে ওমর সানী ও জায়েদ খানকে ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
স্ত্রী চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে হয়রানি ও বিরক্ত করার কারণে স্বামী চিত্রনায়ক ওমর সানী সেই অনুষ্ঠানে জায়েদ খানকে চড় মারেন। অন্যদিকে ওমর সানীকে পিস্তল বের করে মারার হুমকি দেন জায়েদ। দুই দিন ধরে এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা তৈরি করেছে। তাঁদের বেশির ভাগেরই প্রশ্ন ছিল, এ ঘটনায় মৌসুমী কেন মুখ খুলছেন না? আজ সোমবার সকালে প্রকাশ হওয়া অডিও বার্তায় বিষয়টি নিয়েই কথা বললেন মৌসুমী।
এ ঘটনায় গতকাল শিল্পী সমিতি বরাবর ওমর সানী অভিযোগও করেন। তাঁর স্বাক্ষরিত অভিযোগে লেখা হয়, ‘সমিতির সদস্য জায়েদ খান চার মাস যাবৎ আমার স্ত্রী আরিফা পারভীন জামান মৌসুমীকে নানা ধরনের হয়রানি ও বিরক্ত করে আসছে। আমার সুখের সংসার ভাঙার জন্য বিভিন্ন কৌশলে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে।
২ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের সেই অডিও বার্তায় মৌসুমী বলেন, ‘আমি মনে করি, আমার প্রসঙ্গ টানার কোনো প্রয়োজনীয়তাই ছিল না। আমি জায়েদকে অনেক স্নেহ করি। সে আমাকে যথেষ্ট সম্মান করে। আমাদের মধ্যে যতটুকু কাজের সম্পর্ক, সেটা অনেক ভালো সম্পর্ক। সেখানে আমাকে অসম্মান করার প্রশ্নই ওঠে না এবং ওর মধ্যে আমি গুণ ছাড়া অপ্রীতিকর কিছুই দেখি না, কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, সেটা আমি দেখিনি। ও ভালো ছেলে। সে আমাকে কখনোই অসম্মান করেনি।’
ঘটনাটি কেন বারবার আসছে উল্লেখ করে মৌসুমী অডিও বার্তাটিতে আরও বলেন, ‘কেন ঘটনাটা বারবার আসছে—প্রত্যকটি জায়গায় সে আমাকে বিরক্ত করছে, উত্ত্যক্ত করছে। এটা আমার আসলে…কেন হচ্ছে জানি না। হওয়া উচিত না। এটা একান্তই আমাদের ব্যক্তিগত সমস্যা। সেই সমস্যা আমাদের পারিবারিকভাবেই সলভ হওয়া উচিত ছিল।
সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, জায়েদের এখানে খুব একটা দোষ নেই, আমি দোষ খুঁজে পাচ্ছি না। আরেকটি কথা বলতে চাই, আমাকে এই ছোট করার মধ্যে যাকে আমরা শ্রদ্ধা করে এসেছি আমাদের ওমর সানী ভাই, তিনি এখন কেন এত আনন্দ পাচ্ছেন, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। আমার কোনো সমস্যা থাকলে আমার সঙ্গে সলভ করবে। সেটিই আমি আশা করি।
আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা একটি নিউজ পেলেই সেটা কথা না বলেই সহজভাবে লিখে দেন, এটা কাম্য নয়। একটু আলোচনা করা উচিত। যেহেতু আমার প্রসঙ্গ আসছে, আমারটা আমার কাছে জানার দরকার ছিল। তাহলে হয়তো প্রসঙ্গটি লিখতেন না। তিনি একতরফা বলেছেন, আমিও কিছু বলেছি কি না, অভিযোগ করেছি কি না, জানা দরকার ছিল। সে ক্ষেত্রে বলব যে অডিওটি জরুরি। আমার নামটা এখানে যেন কোনো প্রয়োজনে–অপ্রয়োজনে না আসে।’
ওমর সানী শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ দেয়ার সময় আরও বলেন, এই ব্যাপারে জায়েদকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তার প্রমাণ আমার ছেলের কাছেও আছে। তা ছাড়া মুরব্বি হিসেবে ডিপজল ভাইয়ের কাছেও অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। ডিপজল ভাইয়ের ছেলের বিয়েতে জায়েদ খানের সঙ্গে দেখা হলে এই বিষয়ে সংযত হওয়ার অনুরোধ করি।
এতে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। হঠাৎ করে তার পিস্তল বের করে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’ পরে তিনি অভিযোগ করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতিকে অনুরোধ করেন। কিন্তু এই ঘটনা শুরু থেকে অস্বীকার করে আসছেন জায়েদ খান।
তিনি বলেন, ‘একজন শিল্পী আরেকজন শিল্পীকে এভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ করতে পারেন না। প্রথমত, পিস্তল আমার সঙ্গে ছিল না। আর ঘরসংসার ভাঙার ইঙ্গিত খুবই খারাপ। এতে মৌসুমীকেও ছোট করা হচ্ছে। গতকাল থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই নাটক চলছে। তিনি যখন দেখেছেন আমি এগুলোর সঙ্গে নেই, তখন ভিন্ন দিকে বিষয়টাকে নিয়ে যাওয়া ঠিক হচ্ছে না।’