মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিজেপির নেতা-নেত্রীদের কটূক্তির জেরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরেও আজ শুক্রবার বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে পার্ক সার্কাসের সাতমাথার মোড়ে।
হাওড়া জেলার ধুলাগড়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন, গাড়ির টায়ারে আগুন দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিপেটা করতে হয়।সবচেয়ে বড় সমাবেশ হয় পার্ক সার্কাসে, যেখানে প্রতিবাদকারীদের তরফে অনেকেই বক্তব্য দেন। বক্তারা সবাই ভারতবর্ষে ক্রমবর্ধমান মুসলমান বিদ্বেষের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির ধারাবাহিক উসকানিমূলক আচরণের জন্যই হয়েছে।
কলকাতায় শুধু পার্ক সার্কাসই নয়, সর্বভারতীয় মুসলিম সমাজের একটি সংগঠন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব ইন্ডিয়ার (এসডিপিআই) নেতৃত্বে অন্তত আরও দুই জায়গায় প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। এর একটি হলো পশ্চিম কলকাতার খিদিরপুর ও অপরটি মধ্য কলকাতার রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে। কলকাতার তিন জায়গা থেকেই কোনো সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি।
পার্ক সার্কাসে একজন বক্তা বলেন, যেভাবে ভারতে উসকানিমূলক প্রচার ও ভাষণ বাড়ছে, তাতে মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। এই আতঙ্ক থেকে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টি হলে ক্ষমতাসীন দলকে দায়িত্ব নিতে হবে।এই সমাবেশে অন্তত ২০ হাজার মানুষ এসেছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সমাবেশের ফলে মধ্য কলকাতাজুড়ে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়।
সমাবেশে একটি বিষয় নিয়ে অনেক বক্তাই বলেন। সেটি হলো, ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি। ‘ভারতের সেক্যুলার দলগুলো আরও বড় বিপদ ডেকে আনছে। কারণ, মুসলমান সমাজ বিপদে পড়লে তাঁরা মুখ খুলছেন না। তাঁদের ভয়, হিন্দু ভোট তাঁদের বিরুদ্ধে চলে যাবে। কিন্তু এর ফলে পরবর্তী সময়ে হিন্দু ও মুসলমান দুই ভোটই তাঁরা হারাবেন’—বলেন মোহাম্মদ আশরাফ নামের এক বক্তা।
পার্ক সার্কাসের সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, মুসলমান সমাজের পক্ষে আজকে ভারতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান-বিক্ষোভ দেখানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহানবী (সা.)-কে কটাক্ষের ঘটনায় উত্তর প্রদেশের কানপুরে সম্প্রতি কিছু মুসলমান বিক্ষোভ দেখালে অন্তত এক হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।