যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় চার ব্যক্তিকে পিটুনি দিয়েছেন এলাকাবাসী। পরে ওই চারজন ও তাঁদের সঙ্গে থাকা এক নারীকে পুলিশে দিয়েছেন তাঁরা। এ সময় তাঁদের ব্যবহৃত একটি লাল রঙের ব্যক্তিগত গাড়ি, মুঠোফোন, পুরোনো একটি ক্যামেরা ও ভুয়া পরিচয়পত্র জব্দ করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার খাজুরা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে নুরুদ্দিন শেখ, শুভ মিয়া, সাইফুল ইসলাম, এস এম শাহজাহান ও রাজিয়া সুলতানা দৈনিক মাতৃভূমির খবর নামের একটি পত্রিকার স্টিকার লাগানো লাল রঙের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরা বাজারে অবস্থিত আশার আলো সমবায় সমিতির কার্যালয়ে আসেন। এরপর তাঁরা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিবের একটি ভুয়া চিঠি দেখিয়ে আশার আলোর অফিসে অডিট করতে চান এবং প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতির দেখিয়ে উৎকোচ দাবি করেন।
গণপিটুনির শিকার ব্যক্তিরা হলেন মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া গ্রামের হিরণ শেখের ছেলে নুরুদ্দিন শেখ (২৮), একই গ্রামের স্বপন মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (২৪), একই উপজেলা কলসেরকান্দি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫), রাজধানীর বংশালের আগামাসি লেনের মঞ্জুর হোসেনের ছেলে এস এম শাহজাহান (৪২)।তাঁদের সঙ্গে পুলিশে দেওয়া নারী হলেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া মেঠোপাড়া গ্রামের কিসমত দফাদারের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা ওরফে ডলি (২৮)।
আশার আলোর অফিসের কর্মকর্তারা তাঁদের পরিচয়পত্র ও অফিস অডিটের অনুমতিপত্র দেখতে চান। তাঁরা ভুয়া পরিচয়পত্র ও অফিস অডিটের ভুয়া অনুমতিপত্র দেখান। কথা বলে সমিতির নির্বাহী পরিচালক ও সভাপতির সন্দেহ হলে তাঁরা খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। পুলিশ আসার আগে স্থানীয় জনতা পুরুষ চারজনকে পিটুনি দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করেন।
আশার আলো সমবায় সমিতির নির্বাহী পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘অফিসে এসে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তাঁদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করি। এরপর সমিতির সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে কল করে ডাকি। এ সময় তাঁরা অফিস অডিটের দায়িত্ব পেয়েছেন জানিয়ে একটি ভুয়া অনুমতিপত্র দেখান। কথাবার্তার একপর্যায়ে সন্দেহ হলে আমরা পুলিশে খবর দিই।’আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ উদ্দীন।
পুলিশ জানায়, প্রতারক চক্রটি গত মঙ্গলবার এবং গতকাল বুধবার স্থানীয় স্বপ্নের সেতু, সাহসী ও খাজুরা সমবায় সমিতিতে গিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও লাইসেন্স বাতিলের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।